ইস্তেখারার নামাজ
টেমপ্লেট:Expand Arabic টেমপ্লেট:Islam সালাত আল-ইস্তিখারা (টেমপ্লেট:Lang-ar), যেটি পরামর্শ খোঁজার প্রার্থনা হিসাবে অনুবাদ করা হয়, মুসলিমদের দ্বারা পাঠ করা একটি প্রার্থনা যারা তাদের জীবনের সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হওয়ার সময় ঈশ্বর থেকে নির্দেশনা চান। ইস্তেখারা শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো, কোন জিনিসের ক্ষেত্রে কল্যাণ কামনা করা অর্থাৎ আপনার যদি কোন কাজ করার ইচ্ছা হয় কাজটি আপনার জন্য কল্যাণকর নাকি বিপদজনক এ বিষয়ে আল্লাহর কাছ থেকে পরামর্শ তলব করা। সালাতুল ইস্তেখারা হলো, আল্লাহর নিকট কোন জিনিসের ক্ষেত্রে কল্যাণ কামনা করা। কোন কিছু নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা থাকলে এই নামাজ পড়া হয়। এই নামাজ খুব নিয়ামতপুর্ণ । আরবীতে সালাহ নামে পরিচিত নামাযটি নামাজের দুটি একক বা রাকাত এর পরে সালাত আল-ইস্তিখারা-এর দোয়া দ্বারা সম্পাদিত হয়। এই নামাজটির নিয়ম হলো, দুই রাকাত নামাজ পড়বে তারপর নামাজ শেষে আল্লাহর প্রশংসা করবে অর্থাৎ আল্লাহর হামদ পড়বে তারপর রাসুলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর দরূদ পড়বে। তারপর একটি দোয়া পড়বে যেটা নিম্নে দেওয়া হয়েছে। এটি ভাগ্য গণনাকাররী তীর এর একটি অনুমোদিত বিকল্প হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিল, যা ইসলামে অবৈধ এবং প্রাক-ইসলামী আরবে প্রচলিত ছিল।
গুরুত্ব
নিজের জীবনে, একজন ব্যক্তির অজানা ফলাফল সহ অনেক বিষয়ে উন্মোচিত হয়, এবং সে অজানা পরিণতি সহ বিষয়গুলি গ্রহণ করে, সেগুলি ভাল বা খারাপ কিনা, তার এই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত কি না। তাই আল্লাহ ইস্তেখারা নামাযকে দ্বিধার চিকিৎসা এবং সমস্যার সমাধান হিসেবে নির্ধারণ করেছেন যাতে দ্বিধা স্থিরতা এবং সন্দেহ নিশ্চিততায় পরিণত হয়, ফলে সে আশ্বস্ত ও শান্ত হয়, আল্লাহ তার জন্য যা নির্ধারণ করেছেন তাতে সন্তুষ্ট হন, যদিও তা মন্দ হয়। চেহারায়, কারণ সে তার প্রভুর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে এবং তার উপর ভরসা করেছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের শেখাতে আগ্রহী ছিলেন যদি তাদের মধ্যে কেউ কোন বিষয়ে চিন্তা করেন, যদি তিনি তা করার ইচ্ছা করেন বা করার সিদ্ধান্ত নেন তবে তিনি জানেন না। এটা তার জন্য ভালো হোক বা বাস্তবে না হোক, কিন্তু চেহারায় সে এটাকে তার স্বার্থে দেখে।
হুকুম
ওলামায়ে কেরাম একমত যে, ইস্তিখারার নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। তার দলীল নিম্নের বোখারীর হাদীস
নামাজের বর্ণনা
সালাত আল-ইস্তিখারার বর্ণনা যা "পরামর্শ অন্বেষণের প্রার্থনা"-তে অনুবাদ করে ইসলামের সুপরিচিত শিষ্য, জাবির ইবনে আবদ-আল্লাহ আল--সালামি এর দ্বারা বর্ণিত হয়েছে। , যিনি বলেছেন:[১]
আল্লাহর রসূল তাঁর সাহাবীদেরকে সব বিষয়ে আল্লাহর কাছ থেকে পরামর্শ (ইস্তিখারা) চাইতে শেখাতেন, যেমন তিনি তাদেরকে কোরআন থেকে অধ্যায় শেখাতেন। সে বলেছিল:
'তোমাদের মধ্যে কেউ যদি কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে চিন্তিত হয় বা কোনো পদক্ষেপ নিতে চায় তাহলে সে যেন দুই ওয়াক্ত নামায পড়ে।' :
"হে আল্লাহ, আমি আপনার জ্ঞানের মাধ্যমে আপনার পরামর্শ চাই এবং আমি আপনার শক্তির মাধ্যমে আপনার সাহায্য চাই এবং আমি আপনার অপার অনুগ্রহের জন্য আপনার কাছে চাই, কারণ আমি না থাকলেও আপনিই আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন এবং আমি না থাকলেও আপনিই জানেন এবং আপনি একা অদৃশ্যের সমস্ত জ্ঞানের অধিকারী। হে আল্লাহ, যদি আপনি এই বিষয়টি (এখানে উল্লেখ করুন) আমার দ্বীন, আমার জীবন ও জীবিকা এবং আমার কাজের পরিণাম, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্পর্কে আমার জন্য কল্যাণকর বলে জানেন, তাহলে আমার জন্য এটি নির্ধারণ করুন এবং আমার জন্য এটি সহজ করুন। অতঃপর এর মধ্যে আমার জন্য বরকত স্থাপন করুন, এবং যদি আপনি জানেন যে এই ব্যাপারটি আমার জন্য আমার দ্বীন, আমার জীবন ও জীবিকা এবং আমার বিষয়ের শেষের জন্য ক্ষতিকর, তবে এটিকে আমার থেকে সরিয়ে দিন এবং আমাকে তা থেকে সরিয়ে দিন এবং এর জন্য আদেশ দিন। আমার কাছে যা ভালো, তা যেখানেই থাকুক এবং আমাকে তাতে সন্তুষ্ট কর।"
আরেকটি অনুবাদ নিম্নরূপ:[২]
হে আল্লাহ, আমি আপনার জ্ঞানের ভিত্তিতে [একটি পছন্দ করার জন্য] আপনার দিকনির্দেশনা চাই, এবং আমি আপনার ক্ষমতার গুণে সামর্থ্য চাই এবং আমি আপনার মহান অনুগ্রহ চাই। তোমার ক্ষমতা আছে, আমার নেই। এবং আপনি জানেন, আমি জানি না. আপনি গোপন বিষয়ের জ্ঞাত। হে আল্লাহ, যদি আপনার জানামতে, এই বিষয়টি (তাহলে নাম উল্লেখ করা উচিত) আমার জন্য দুনিয়া ও আখেরাত উভয় ক্ষেত্রেই কল্যাণকর হয়, তাহলে আমার জন্য এটি নির্ধারণ করুন, আমার জন্য এটি সহজ করুন এবং আমার জন্য এতে বরকত দিন। আর যদি আপনার জানামতে তা আমার জন্য এবং আমার ধর্মের জন্য, আমার জীবিকা ও আমার বিষয়ের (অথবা: আমার জন্য এই দুনিয়া এবং পরকাল উভয়ের জন্য) খারাপ হয়, তবে আমাকে তা থেকে দূরে সরিয়ে দিন, [এবং আমার থেকে দূরে সরিয়ে দিন], এবং যেখানেই থাকুক না কেন আমার জন্য কল্যাণের নির্দেশ দিন এবং আমাকে তাতে সন্তুষ্ট করুন।
ইস্তেখারার দোয়া
হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সঃ) আমাদেরকে আমাদের কাজকর্মের ব্যাপারে ইস্তিখারা পড়ার নিয়ম এরুপ গুরুত্বসহকারে শিক্ষা দিতেন যেরুপ গুরুত্ব সহকারে আমাদেরকে কুরআন মজীদের কোন সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, যখন তোমাদের কেহ কোন কাজ করার ইচ্ছা করে (আর সে উহার পরিণতি সম্পর্কে চিন্তিত হয়, তখন তাহার এইভাবে ইস্তেখারা করা উচিত যে,) সে প্রথমে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, এরপর এইভাবে দোয়া করবে –
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الغُيُوبِ ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ ثم تسميه بعينه خَيْرا لِي في عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ قال أو فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاقْدُرْهُ لي وَيَسِّرْهُ لي ثُمَّ بَارِكْ لي فِيهِ ، اللهم وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّه شَرٌّ لي في ديني وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي أَوْ قَالَ في عَاجِلِ أمري وَآجِلِهِ ، فَاصْرِفْنِي عَنْهُ [واصْرِفْهُ عَنِّى]، وَاقْدُرْ لِي الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ رضِّنِي به،
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্যে আপনার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আমি আপনার শক্তির সাহায্যে শক্তি ও আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। কেননা আপনিই ক্ষমতা রাখেন; আমি ক্ষমতা রাখি না। আপনি জ্ঞান রাখেন, আমার জ্ঞান নেই এবং আপনি অদৃশ্য বিষয়ে সম্পূর্ণ পরিজ্ঞাত। হে আল্লাহ! আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ (নিজের প্রয়োজনের নামোল্লেখ করবে) আমার বর্তমান ও ভবিষ্যত জীবনের জন্য কিংবা বলবে আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে কল্যাণকর হলে আপনি তা আমার জন্য নির্ধারণ করে দিন। সেটা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং তাতে বরকত দিন। হে আল্লাহ্! আর যদি আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে কিংবা বলবে, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য অকল্যাণকর হয়, তবে আপনি আমাকে তা থেকে ফিরিয়ে দিন এবং সেটাকেও আমার থেকে ফিরিয়ে রাখুন। আমার জন্য সর্বক্ষেত্রে কল্যাণ নির্ধারণ করে রাখুন এবং আমাকে সেটার প্রতি সন্তুষ্ট করে দিন।”[সহিহ বুখারী (৬৮৪১) এ হাদিসটির আরও কিছু রেওয়ায়েত তিরমিযি, নাসাঈ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমাদে রয়েছে]
ইবনে হাজার হাদিসটির ব্যাখ্যায় বলেন:
استخارة (ইস্তিখারা) শব্দটি اسم বা বিশেষ্য। আল্লাহ্র কাছে ইস্তিখারা করা মানে কোন একটি বিষয় বাছাই করার ক্ষেত্রে আল্লাহ্র সাহায্য চাওয়া। উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে ব্যক্তিকে দুটো বিষয়ের মধ্যে একটি বিষয় বাছাই করে নিতে হবে, সে যেন ভালটিকে বাছাই করে নিতে পারে সে প্রার্থনা।
তাঁর কথা: “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সর্ববিষয়ে ইস্তিখারা করা শিক্ষা দিতেন” : ইবনে আবু জামরা বলেন, এটি এমন একটি আম (সাধারণ); যার থেকে কিছু একককে খাস (বিশেষায়িত) করা হয়েছে। কেননা ওয়াজিব ও মুস্তাহাব কর্ম পালন করার ক্ষেত্রে এবং হারাম ও মাকরূহ বিষয় বর্জন করার ক্ষেত্রে ইস্তিখারা করা যাবে না। তাই ইস্তিখারার গণ্ডি সীমাবদ্ধ শুধু মুবাহ বিষয়ের ক্ষেত্রে এবং এমন মুস্তাহাবের ক্ষেত্রে যে মুস্তাহাব অপর একটি মুস্তাহাবের সাথে সাংঘর্ষিক; সুতরাং দুইটির কোনটা আগে পালন করবে কিংবা কোনটা বাদ দিয়ে কোনটা পালন করবে সেক্ষেত্রে। আমি বলব: এ সাধারণটি বড় ছোট সকল বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। কারণ অনেক ছোটখাট বিষয়ের উপর অনেক বড় বিষয়ও নির্ভর করে থাকে।
তাঁর কথা: “উদ্যোগ নেয়”: ইবনে মাসউদের হাদিসে এসেছে, যখন তোমাদের কেউ কোন কিছু করার সংকল্প করে, তখন সে যেন বলে।
তাঁর কথা: “সে যেন দুই রাকাত নামায আদায় করে... ফরয নামায নয়”: এ বাণীর মাধ্যমে উদাহরণস্বরূপ ফজরের নামাযকে বাদ দেয়া হয়েছে...। ইমাম নববী তাঁর ‘আল-আযকার’ গ্রন্থে বলেছেন: উদাহরণস্বরূপ যদি যোহরের সুন্নত নামাযের পরে, কিংবা অন্যকোন নামাযের সুন্নতের পরে কিংবা সাধারণ নফল নামাযের পরে ইস্তিখারার দোয়া করে...। তবে আপাত প্রতীয়মান হচ্ছে যে, যদি ঐ নামাযের সাথে ইস্তিখারার নামাযেরও নিয়ত করে তাহলে জায়েয হবে; নিয়ত না করলে জায়েয হবে না।
ইবনে আবু জামরা বলেন, ইস্তিখারার দোয়ার আগে নামায পড়ার রহস্য হল, ইস্তিখারার উদ্দেশ্য হচ্ছে একসাথে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভ করা। আর এটি পেতে হলে রাজাধিরাজের দরজায় নক করা প্রয়োজন। আল্লাহ্র প্রতি সম্মান প্রদর্শন, তাঁর স্তুতি জ্ঞাপন ও তাঁর কাছে ধর্ণা দেয়ার ক্ষেত্রে নামাযের চেয়ে কার্যকর ও সফল আর কিছু নেই।
তাঁর কথা: “অতঃপর সে যেন বলে”: এর থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, এ দোয়াটি নামায শেষ করার পরে পড়তে হবে। এমন একটি সম্ভাবনাও রয়েছে যে, এক্ষেত্রে ক্রমধারা হবে নামাযের যিকির-আযকার ও দোয়াগুলো পড়ার পরে সালাম ফিরানোর আগে ইস্তিখারার দোয়াটি পড়বে।
তাঁর কথা: اللهم إني أستخيرك بعلمك এখানে ب হরফটি করণাত্মক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এ ব্যাখ্যার আলোকে অর্থ হবে, ‘আমি আপনার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করছি; যেহেতু আপনি অধিক জ্ঞানী’। এবং بقدرتك এর মধ্যেও ب হরফটি একই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। (সেক্ষেত্রে অর্থ হবে, আমি আপনার কাছে শক্তি প্রার্থনা করছি; কারণ আপনি ক্ষমতাবান।) আবার ب হরফটি استعانة বা সাহায্য অর্থেও ব্যবহৃত হতে পারে। (সে ক্ষেত্রে অর্থ হবে ‘হে আল্লাহ্! আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্যে আপনার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করছি’। দ্বিতীয় বাক্যের অর্থ হবে, ‘আমি আপনার শক্তির সাহায্যে শক্তি প্রার্থনা করছি’।)
তাঁর কথা: (أستقدرك) অর্থ হচ্ছে, উদ্দেশ্য হাছিলে আমি আপনার কাছে শক্তি প্রার্থনা করছি। আরেকটি অর্থের সম্ভাবনা রয়েছে, সেটা হচ্ছে- আমি আপানার কাছে প্রার্থনা করছি- আপনি আমার তাকদীরে সেটা রাখুন। উদ্দেশ্য হচ্ছে- আপনি আমার জন্য সেটা সহজ করে দিন।
তাঁর কথা: (وأسألك من فضلك) (অর্থ- আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি)। এ বাক্যের মধ্যে এদিকে ইশারা রয়েছে যে, আল্লাহ্র দান হচ্ছে তাঁর পক্ষ থেকে অনুগ্রহ। তাঁর নেয়ামত প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাঁর উপর কারো কোন অধিকার নেই। এটাই আহলে সুন্নাহ্র অভিমত।
তাঁর কথা: (فإنك تقدر ولا أقدر، وتعلم ولا أعلم ) (অর্থ- কেননা আপনিই ক্ষমতা রাখেন; আমি ক্ষমতা রাখি না। আপনি জ্ঞান রাখেন, আমার জ্ঞান নেই): এ কথার দ্বারা এদিকে ইশারা করা হয়েছে যে, জ্ঞান ও ক্ষমতা এককভাবে আল্লাহ্র জন্য। আল্লাহ্ বান্দার জন্য যতটুকু তাকদীর বা নির্ধারণ করে রেখেছেন এর বাইরে বান্দার কোন জ্ঞান বা ক্ষমতা নেই।
তাঁর কথা: (اللهم إن كنت تعلم أن هذا الأمر) (অর্থ, হে আল্লাহ! আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ। অপর এক বর্ণনায় এসেছে, ‘নিজের প্রয়োজনের নামোল্লেখ করবে’): ভাবপ্রকাশের বাহ্যিক শৈলী থেকে বুঝা যাচ্ছে প্রয়োজনটি উচ্চারণ করবে। আবার এ সম্ভাবনাও রয়েছে যে, দোয়া করার সময় মনে করলেও চলবে।
তাঁর কথা: (فاقدره لي..) (অর্থ- আপনি তা আমার জন্য নির্ধারণ করে দিন): অর্থাৎ আমার জন্য সেটা বাস্তবায়ন করে দিন। কিংবা অর্থ হবে আমার জন্য সেটা সহজ করে দিন।
তাঁর কথা: (فاصرفه عني واصرفني عنه) (অর্থ, তবে আপনি তা আমার থেকে ফিরিয়ে নিন এবং আমাকেও তা থেকে ফিরিয়ে রাখুন): অর্থাৎ সে বিষয়টি ফিরিয়ে নেয়ার পরে আপনার অন্তর যেন সেটার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে না থাকে।
তাঁর কথা: (رضِّني...) (অর্থ আমাকে তাতে সন্তুষ্ট রাখুন)। যেন আমি সেটা না পাওয়াতে ও না ঘটাতে অনুতপ্ত না হই। কেননা আমি তো চূড়ান্ত পরিণতি জানি না। যদিও আমি প্রার্থনাকালে সেটার প্রতি সন্তুষ্ট ছিলাম...।
এ দোয়ার গূঢ় রহস্য হচ্ছে যাতে করে বান্দার অন্তর সেই বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে না থাকে; পরিণতিতে সে মানসিক অস্বস্তিতে ভুগবে। সন্তুষ্টি বলতে বুঝায় তাকদীরের উপর অন্তরের স্বস্তি পাওয়া।
হাফেয ইবনে হাজার কৃত সহিহ বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্থ থেকে সংক্ষেপে সমাপ্ত। অধ্যায়: ‘কিতাবুত তাওহীদ; উপ-অধ্যায়: ‘দোয়াসমূহ’।
নামাযের শর্ত
কোনো বিষয়ে পরামর্শ চাওয়ার ক্ষেত্রে ইস্তিখারা সালাত আদায় করা হয়, যেখানে হয় কাজটি নিজের জন্য যোগ্য বা ব্যক্তিটি কর্মের যোগ্য, যেমন জয়নাব বিনতে জাহশ নবী মুহাম্মদ সা: এর বিবাহের প্রস্তাবে ইস্তিখারা প্রার্থনা করেছিলেন, পণ্ডিতদের ব্যাখ্যা হিসাবে তিনি নিজেকে নবীর জন্য যোগ্য কিনা তা খুঁজে বের করতে।
একজনকে অবশ্যই "সালাত আল-ইস্তিখারাহ" এর আগে ওজু করতে হবে, একইভাবে, যেভাবে একজন করে, যে কোনো সালাহ মধ্যে প্রবেশ করার সময়।
ইবনে হাজার এই হাদিসটির উপর মন্তব্য করে বলেন: "ইস্তিখারাহ হল একটি শব্দ যার অর্থ হল একজনকে বেছে নিতে সাহায্য করার জন্য আল্লাহর কাছে অনুরোধ করা, যার অর্থ হল দুটি জিনিসের মধ্যে সেরাটি বেছে নেওয়া যেখানে একজনকে তাদের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে।"
সালাহ ইস্তিখারা তখন করা হয় যখন কোন ফরয বা নিষিদ্ধ (হারাম) কোন বিষয়ের বাইরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাই হজ্জে যেতে হবে কি না তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ সে যদি আর্থিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম হয় তাহলে হজ ফরজ এবং তার কোনো বিকল্প নেই।
কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়া ("ইস্তিখারা") অন্য সব ধরনের অনুমতিযোগ্য বিষয়ে করা যেতে পারে যেখানে একটি পছন্দ করতে হবে যেমন কিছু কেনা, চাকরি নেওয়া, বা জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা ইত্যাদি।
হাদিসে লিপিবদ্ধ আছে যে মুহাম্মদ তার শিষ্যদেরকে প্রতিটি বিষয়ে আল্লাহর কাছ থেকে পরামর্শ নিতে ('ইস্তিখারা') শেখাতেন যেমন তিনি তাদের কুরআন থেকে সূরা শিখাতেন।[৩]
পণ্ডিতগণ বলেন, ইস্তিখারা ছালাত ফরজ ছালাতের বাইরে দুই রাকাত নামাজের যে কোনো একটি, তা হয় সুন্নত বা নফল, এবং ঋতুস্রাবের সময় মহিলারা নামায ছাড়াই দুআ করতে পারে এবং জরুরী পরিস্থিতিতে হারাম সময়েও এই সালাত আদায় করতে পারে।
- ইস্তেখারার শর্ত
- নিয়্যাত করা।( মনে মনে)
- প্রয়োজনীয় সকল চেষ্টা করা। অর্থাৎ ওয়াসিলা গ্রহণ করা।
- আল্লাহর হুকুমে খুশী থাকা
- শুধুমাত্র হালাল কিংবা বৈধ বিষয়ে ইস্তেখারা করা।
- তাওবা করা, অন্যায় করে কিছু গ্রহণ না করা, হারাম উপার্জন না করা, হারাম মাল ভক্ষণ না করা।
- যে সব বিষয়গুলোর নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে অর্থাৎ বিষয়টি তার ইচ্ছার অধীনে সেসব বিষয়ে ইস্তেখারা না করা।
ইস্তেখারা স্বপ্নে নয়
অধিকাংশ মানুষ এটা ধারণা করে যে, ইস্তেখারার নামাজের পর তাকে স্বপ্ন দেখানো হবে এবং সে সঠিকপথ নির্দেশিত হবে। এটি একটি প্রচলিত ভুল। তার উচিত হবে কোন একটি সিদ্ধান্তকে অগ্রগণ্য করে তারপর বিষয়টিকে আল্লাহর উপর সোপর্দ করা। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যখন তোমরা কোন বিষয়ে দৃঢ ইচ্ছা করবে তখন আল্লাহর উপর নির্ভর করবে। অতএব এরপর কোন বিষয় যদি তিনি সহজ করে দেন তাহলে সেটা ঠিক আছে আর যদি তা না হয় তাহলে এটা আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত অন্য কিছু নয়।
বিবাহের ক্ষেত্রে ইস্তেখারা
এসবের ক্ষেত্রে ইস্তেখারার ব্যপারে সুন্নাহ রয়েছে। তবে সবার প্রথমে প্রয়োজন উসিলার ব্যবহার। অর্থাৎ নিজের সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করার পর বাকীটা আল্লাহর তাওয়ালায় দিয়ে দেওয়া। যদি কোন পুরুষ বা মহিলা বাগদানের জন্য ইস্তিখারা করতে চায় , অর্থাৎ (বিয়ের), তবে তারও ইস্তেশারা বা পরামর্শ করা উচিত এবং কারণগুলি গ্রহণ করা উচিত, যেমন ফাতিমা বিনতে কায়সের হাদিসে রয়েছে ,
কুরআনের দ্বারা ইস্তিখারা
কিছু লোক কুরআন থেকে অশুভ গ্রহণ করে কুরআনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা প্রকাশ করে। যদি তারা এমন একটি আয়াত খুঁজে পায় যা কিছু করার আদেশ দেয় তবে তারা তা করে, যেমন ভ্রমণ বা বিয়ে করা। যদি তারা এমন একটি আয়াত খুঁজে পায় যা কিছু করতে নিষেধ করে, তারা কাজটি ছেড়ে দেয় এবং বুঝতে পারে যে এটি নিষিদ্ধ ছিল। মুহাম্মাদ আল-খিদর হুসেন তার বই (কোরআনের বাগ্মীতা) এ উল্লেখ করেছেন যে কিছু ঐতিহাসিক বলেছেন যে কিছু পন্ডিত সমুদ্রপথে ভ্রমণ করতে চেয়েছিলেন, তাই তারা কুরআন খুলেছিলেন এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর বাণীর কাছে এসেছিলেন: {এবং সমুদ্রকে ছেড়ে দিন বিশ্রাম। নিঃসন্দেহে তারা একটি নিমজ্জিত বাহিনী।} [আদ-দুখান: ২৪], সুতরাং তারা যাত্রা ছেড়ে দিল এবং জাহাজটি তার যাত্রীদের নিয়ে সমুদ্রে ডুবে গেল। এটি ঘটনাক্রমে ঘটেছিল, এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহ কুরআন নাজিল করেননি এটি থেকে অশুভ নেওয়ার জন্য, বরং তিনি এটিকে অন্তরে যা আছে তার নিরাময় হিসাবে নাজিল করেছেন। কিছু লোক অন্যভাবে কুরআন থেকে নির্দেশনা খোঁজে, তা হল কুরআন নিয়ে এর একটি এলোমেলো পৃষ্ঠা খুলুন, তারপর প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম লাইনটি দেখুন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সাতটি পৃষ্ঠা গণনা করে, তারপর সাতটি লাইন, তারপর সাতটি শব্দ, তারপর পড়ে। যদি তারা এমন একটি আয়াত খুঁজে পায় যা কিছু করার আদেশ দেয়, তারা তা করে। যদি তারা এমন একটি আয়াত খুঁজে পায় যা কিছু করতে নিষেধ করে তবে তারা তা ছেড়ে দেয়। ইসলামী আইনে এই ইস্তিখারার কোন ভিত্তি নেই এবং কোন ইমাম বা আলেমদের কাছ থেকে প্রেরিত হয়নি। এটি কাকতালীয় এবং ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে। কোরান একটি পথনির্দেশক গ্রন্থ হিসাবে অবতীর্ণ হয়েছিল, যেমনটি আমরা আগে উল্লেখ করেছি। নবী মুহাম্মদ ইস্তিখারা সালাত এবং এর প্রার্থনা নির্ধারণ করেছেন এবং একজন মুসলমানের জন্য এই সরল পথ ব্যতীত অন্য কিছু অবলম্বন করা নিষিদ্ধ, যেমন উন্নত উদ্ভাবনের মাধ্যমে ইস্তিখারা অবলম্বন করা, যা আল্লাহর কিতাবের প্রতি কোন সম্মান রাখে না। তার জন্য জ্যোতিষী বা ভবিষ্যদ্বাণীর শরণাপন্ন হওয়া হারাম এবং অন্য কাউকে তার জন্য হেদায়েত চাইতে বলা এবং ইস্তিখারার সহজ ও বৈধ সুন্নাত নিজে পরিত্যাগ করা তার জন্য অনমনীয়।
ইস্তিখারা হল এক প্রকার ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণার অনুশীলন যা প্রাচীন বিশ্বে পরিচিত, এবং গবেষকরা এটিকে স্বপ্নের ইনকিউবেশন নামক একটি আচারের সাথে তুলনা করেন যা প্রাচীন ইয়েমেনে প্রচলিত ছিল এবং যা একটি মিহরাব নামক একটি ঘরে অনুষ্ঠিত হয়।
ভাষা
মূল আরবি পাঠ্যটি নীচে রয়েছে, তারপরে ল্যাটিন অক্ষর ব্যবহার করে প্রতিবর্ণীকরণ করা হয়েছে।
এটিও অপরিহার্য যে পাঠকের হৃদয় সম্পূর্ণ নির্ভরতা এবং বিশ্বাসের সাথে ঈশ্বরের প্রতি আন্তরিকভাবে বিনীত হয়:
আল্লাহুম্মা ইন্নি আস্তাখিরুকা বি ইলমিকা ওয়া-আস্তাকদিরুকা বিকুদরতিকা ওয়া-আস'আলুকা মিন ফাদলিকা আল-আদীম। ফা ইন্কা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু। ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আনতা আলামুল ঘুইউব। আল্লাহুম্মা ইন কুনতা তা’লামু আন্না হাদাল-আমরা (আপনার উদ্বেগের কথা উল্লেখ করুন) খায়রুন লি ফিয়ে দ্বীনি ওয়া-মাআশিয় ওয়া-আকিবাতি আমরি, ফাকদুর হু লি ওয়া-ইয়াসির হুলিয় থুম্মা বারিক লি ফিহি। ওয়া ইন-কুন্তা তা’লামু আন্না হাদল আমরা শাররুন লি ফী দ্বীনি ওয়া-মাআশিয় ওয়া-আকিবাতি আমরি। ফা-শ্রিফহু 'আন্নি ওয়া-শ্রিফনি' আনহু। ওয়া আকদুর লিয়াল খায়রা হায়থু কানা থুম্মা আ-র্দিনী বিহী[৪]
ইস্তিশারা
ইস্তিখারা পূরণের জন্য যোগ্য জ্ঞানী ব্যক্তির সাথে ইস্তিশারা বা পরামর্শ প্রয়োজন। ইস্তিশারা ইস্তিখারার আগে বা পরে করা যায়, তবে ইস্তিশারার আগে ইস্তিখারা নামায পড়া হাদিস অনুসারে সর্বোত্তম ও পছন্দনীয়। আল-নওয়াবী বলেছেন: সালাত ইস্তিখারা করার আগে ইস্তেশারা বা পরামর্শ করা বাঞ্ছনীয় যে, এমন একজনের সাথে পরামর্শ করা, যিনি তার পরামর্শ, সহানুভূতি এবং অভিজ্ঞতার জন্য পরিচিত এবং যার ধর্ম ও জ্ঞান একজন বিশ্বাস করেন। শাইখ আল-ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেছেন: সালাত ইলাস্তেখারা যে ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে হেদায়েত চায়, তার সৃষ্টির সাথে পরামর্শ করে এবং তার ব্যাপারে অবিচল থাকে সে কখনোই অনুশোচনা করবে না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন: {সুতরাং আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে আপনি তাদের প্রতি নমনীয় হন। আর তুমি যদি অভদ্র এবং হৃদয়ে রূঢ় হতে, তবে তারা তোমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। সুতরাং তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং এ ব্যাপারে তাদের সাথে পরামর্শ করুন। অতঃপর যখন সিদ্ধান্ত নিবে তখন আল্লাহর উপর ভরসা কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন যারা [তার ওপর] ভরসা করে। কাতাদা বলেছেন: সালাতে ইলাস্তাকরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোন লোক একসাথে পরামর্শ করে না, তবে তারা সবচেয়ে সঠিক বিষয়ে পরিচালিত হয়। সালাত আলইস্তেখারার প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার পর ইস্তিখারা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের মধ্যে রয়েছে ইস্তিশারা বা পরামর্শ।
শেখ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমিন বলেন এবং এই মতের সাথে একমত নন: সালাত ইলাস্তাখারা তার উক্তিতে: “ইস্তিখারা প্রথমে আসে, কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: 'যদি তোমাদের কেউ কিছু করার চিন্তা করে, তবে সে যেন দুই রাকাত নামায পড়ে...' ইত্যাদি। ” অতঃপর যদি তুমি তিনবার তা পুনরাবৃত্তি কর এবং বিষয়টি তোমার কাছে পরিষ্কার না হয়, তাহলে পরামর্শ কর এবং তারপর যা তোমাকে উপদেশ দেওয়া হয়, তা করো। আমরা শুধু বলেছিলাম যে, সে যেন তিনবার হেদায়েত চায়, কারণ এটা ছিল নবীর রীতি, আল্লাহ তাঁর উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তাঁকে শান্তি দান করুন, তিনি যখন দুআ করেন তখন তিনি তিনবার দুআ করেন। কিছু পণ্ডিত বলেছেন যে যতক্ষণ না ব্যক্তি তার কাছে দুটি বিষয়ের মধ্যে উত্তম বিষয়টি পরিষ্কার না করে ততক্ষণ পর্যন্ত নামাযের পুনরাবৃত্তি করতে হবে।
নামাজের পুনরাবৃত্তি
যতক্ষণ কর্ম সম্পর্কে তার সন্দেহ দূর না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ এই ছালাত আদায় করতে পারে। পণ্ডিতরা পরামর্শ দেন যে সাত বার বা সাত দিন নামায পড়ার বর্ণনা দুর্বল, তাই সন্দেহের ক্ষেত্রে নামায পড়ার সংখ্যা সীমিত নয়, কারণ খলিফা উমর এক মাস ইস্তিখারা করেছিলেন কুরআন সংকলনের আগে কারণ তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে এটি একটি বিদাত হবে কারণ নবী মুহাম্মদ এটি নিজেও করেননি বা করার আদেশও দেননি। কিন্তু একমাস ইস্তিখারা করার পর তিনি নিশ্চিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে আশ্বস্ত ও দৃঢ়প্রত্যয়ী হন। এছাড়াও কথিত আছে, খলিফা ওমর বিন খাত্তাব ৫০০ হাদীস নিয়ে হাদীস সংকলন রচনা করেন ও একমাস ইস্তেখারা করার পর এর ফল ভালো হবে না (সম্ভবত কোরআনের সাথে মিশে যাওয়ার আশঙ্কায়) ভেবে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলেন।
ফলাফলের চিহ্ন
ইস্তিখারার ফলাফলের দুটি লক্ষণ রয়েছে
- হৃদয় নেতিবাচক বা ইতিবাচক, কর্মের জন্য স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে।
- যদি পরিস্থিতি সহজ হয় তবে তা হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে ইতিবাচকতার চিহ্ন, আর যদি পরিস্থিতি কঠিন বা কঠিন হয় তবে তা হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে নেতিবাচকতার চিহ্ন।
পণ্ডিতগণ বলেন যে, কিছু প্রচলিত কুসংস্কার আছে যে, ইস্তিখারার ফল লাভের জন্য কিছু কিছু কাজ করা উচিত, যেমন ঘুমানো এবং স্বপ্নে কোনো চিহ্ন থাকা এবং এ বিষয়ে কুরআন বা হাদীসে কোনো নির্ভরযোগ্য উল্লেখ না থাকায় তারা সেগুলো প্রত্যাখ্যান করেন।