আকিদা

সালাফিপিডিয়া থেকে

টেমপ্লেট:ইসলামী আক্বিদাহ টেমপ্লেট:ইসলাম আকিদা ( টেমপ্লেট:Lang-ar–আল্-আকিদাহ ; বহুবচন: العقائد–আল-আকা'ইদ ), যা ইসলামি ধর্মতত্ত্ব নামেও পরিচিত, হল একটি ইসলামি পরিভাষা, যার অর্থ 'কিছু মূল ভিত্তির উপর বিশ্বাস স্থাপন'। বিশ্বাস বা ধর্মবিশ্বাস বুঝাতে মুসলিম সমাজে সাধারণত দুইটি শব্দ ব্যবহৃত হয়: ইমান ও আকিদা। তবে কুরআনসহিহ হাদিসে সর্বদাই'ঈমান' শব্দটিই ব্যবহার করা হয়েছে। "আকিদা" ব্যবহৃত হয়নি। হিজরি দ্বিতীয় শতক থেকে তাবেয়ীগণ (সাহাবি ছাত্র) ও পরবর্তী যুগেই ঈমামগণ (ধর্মীয় বিশ্লেষক ) ধর্মবিশ্বাসের খুঁটিনাটি বিষয় আলোচনার জন্যে"ঈমান" ছাড়াও আরো কিছু পরিভাষা ব্যবহার শুরু করেন। এসকল পরিভাষার মধ্যে রয়েছে 'আল-ফিকহুল আকবার', 'ইলমুত তািহীদ', 'আস–সুন্নাহ', 'আশ-িরীয়াহ', 'উসূলুদিদীন', 'আলকিদাহাহ' ইত্যাদি।[১] এসবের মধ্যে 'আকিদাহ' শব্দটিই অধিক প্রচলিত।

সামগ্রিক অর্থে আকিদা হল, ইসলামের যেসকল ভিত্তি কিতাব, সুন্নাহ এবং সাহাবায়ে কেরামের ঐক্যমত দ্বারা নির্দেশিত তা নির্দ্বিধায় অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা এবং বিনা বাক্যে মেনে নেওয়া এবং এক্ষেত্রে অন্তরে কোনো ধরনের কপটতার স্থান না দেওয়া। সে সকল বিষয় হল: আল্লাহ, ফেরেশতা, তাঁর কিতাব, তাঁর রসূল, কেয়ামত, তাকদিরের ভালো ও মন্দে বিশ্বাস করা এবং কুরআনে যা কিছু এসেছে তার সমস্ত কিছুর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা সেই সাথে নবি (সা.) যা কিছু আল্লাহর তরফ থেকে নিয়ে এসেছেন তা বিনা দ্বিধায় মেনে নেওয়া। এছাড়াও অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস, আল্লাহর একত্ববাদ এবং মহত্ত্ব, তার নির্দেশিত পথে উপাসনা করা, কুফরি বাতিল বা অসত্য হওয়ার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন, ইসলামে অবিশ্বাসী ও আল্লাহর সাথে অপরকে শরিককারী সকলের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন, আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হওয়া, তাঁকে দেখা ও হাশরের মাঠে তাঁর পুরস্কার ও পরিণতির প্রতি বিশ্বাস রাখাও আকিদার অন্তর্ভুক্ত।[২]

শব্দতত্ত্ব[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

আকিদাহ শব্দটি এসেছে সেমিটীয় ধাতুমূল ʿআ-ক্ব-দ থেকে, যার অর্থ "বাঁধা, গিঁট বা দেওয়া"[৩] ("আকিদাহ" শব্দটি শুধু ইসলামী ঈশ্বরতত্ত্ব/ বিশ্বাসব্যবস্থাকেই বোঝায় না; বরং ইসলামে 'ঈশ্বরতত্ত্ব' শব্দটির প্রতিশব্দ হিসেবেও একে ব্যবহার করা হয় এবং সেই অনুযায়ী: "ঈশ্বরতত্ত্ব (আক্বীদাহ) মুসলমানদের সকল বিশ্বাস ও বিশ্বাসব্যবস্থাকে অন্তর্ভূক্ত করে, যার মাঝে নিজেদের সাম্প্রদায়িক পার্থক্যসমূহ এবং দ্বন্দ্বের বিষয়সমূহও অন্তর্ভূক্ত।)[৪] প্রচলিত আরবি ভাষায় আকিদা শব্দটি বিশ্বাস বা ধর্মমত বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

ইমান ও আকিদার সম্পর্ক[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

ঈমান অর্থ হলো স্বীকৃতি দেওয়া বা স্বীকার করা, যার তিনটি ধাপ, প্রথম ধাপটি হলো অন্তরে বিশ্বাসের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান, দ্বিতীয় ধাপটি হলো মুখ দ্বারা অর্থাৎ প্রকাশ্যে বলে ঘোষণার মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান, আর তৃতীয় ধাপটি হলো কাজের মাধ্যমে বা কাজে পরিণত করার মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান। এর মধ্যে অন্তরে বিশ্বাসের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করার ধাপটি আকিদার বা বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কযুক্ত, যা ঈমানের মূল বা মৌলিক ভিত্তি বা শিকড়স্বরূপ। এর প্রমাণ বা দলিল হলো নিম্নোক্ত হাদিসটিঃ


এছাড়া আলেমগণ আকীদা ও ঈমানের পার্থক্য করে বলেন যে, আকীদা বলতে ধর্মবিশ্বাসের সকল মত, পথ, প্রচলন, বৈচিত্র্য ও বর্ণালীকে বোঝায় আর ঈমান শুধু সুনির্দিষ্ট বিশুদ্ধ ইসলামী ধর্মবিশ্বাসকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া আরবি ভাষায় আভিধানিকভাবে আকীদা শব্দটির অর্থ বিশ্বাস, এবং ঈমান শব্দটির আভিধানিক অর্থ হলো স্বীকৃতি দেওয়া, স্বীকার করা বা মেনে নেওয়া। অর্থাৎ কোন বিষয়ে বিশ্বাসের প্রকৃতি বা ধরনের নাম হলো আকীদা, আর কোন আকীদা বা বিশ্বাসকে স্বীকৃতি দেওয়া বা মেনে নেওয়ার নাম হলো তার উপর ঈমান আনা।

সূচনা[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

ইসলামি আকিদার একমাত্র উৎস হচ্ছে ওহী। ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে দু প্রকারের ওহী প্রেরিত হয়েছে : কিতাব (কুরআন) ও সুন্নাত (হাদীস)। কুরআন অনুসারে আল্লাহ রাসূলের প্রতি কিতাব ও হিকমত অবতীর্ণ করেছেন।[৫] হিকমতকে রাসূলের সুন্নাহ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। কুরআনের সাথে সুন্নাহর পার্থক্য হল, সুন্নাহর শব্দাবলী আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়। তবে উভয়টিরই তথ্যসমূহ আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত।[৬]

কর্ম বা আমলের বিষয়ে ইসলামের বিধান নির্ণয়ে কিয়াস বা অনুমানের উপরে নির্ভর করা যায়। কিন্তু ইসলামি বিশ্বাস গায়েব বা অদৃশ্য বিষয়ের উপর নয়। মুসলিম পণ্ডিতদের মতে, এ সকল বিষয়ে মানুষ ওহীর নির্দেশনা ছাড়া অনুমান করে অথবা গবেষণা করে কোনো সমাধান দিতে সক্ষম নয়। এছাড়া ওহীর ব্যাখ্যা সেভাবেই করতে হয়, যেভাবে সাহাবী ও তাবেয়ীগণ ব্যাখ্যা করেছেন।

বিশ্বাসের সাতটি স্তম্ভ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

ঈমানের বা ইসলামি আকীদা বিশ্বাসের উপর স্বীকৃতির ছয়টি বা মতান্তরে সাতটি স্তম্ভ এসেছে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে (আরকান আল-ঈমান)[৭]। যা সব মুসলমানদের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। বিশ্বাসের স্তম্ভগুলো হল:

  1. আল্লাহকে বিশ্বাস
  2. ফেরেস্তাগণকে বিশ্বাস
  3. আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক প্রেরিত কিতাবসমূহে বিশ্বাস (কুরআনসহ)
  4. আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক প্রেরিত সকল নবী এবং রাসুলকে বিশ্বাস
  5. আখিরাত বা পরকালে বিশ্বাস
  6. তাকদীরে বিশ্বাস
  7. পুনরুথানের প্রতি বিশ্বাস

উমার বলেন, টেমপ্লেট:উক্তি

তাওহীদ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল তাওহিদ (টেমপ্লেট:Lang-ar) ইসলাম ধর্মে এক আল্লাহর ধারণাকে বোঝায়।[৮] তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ৷[৯] ইসলামি পরিভাষায় তাওহিদ হল সৃষ্টি ও পরিচালনায় আল্লাহকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে বিশ্বাস করা, সকল ইবাদাত-উপাসনা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্য করা, অন্য সবকিছুর উপাসনা ত্যাগ করা, আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ ও সুউচ্চ গুণাবলীকে তার জন্য সাব্যস্ত করা এবং দোষ ত্রুটি থেকে আল্লাহকে পবিত্র ও মুক্ত ঘোষণা করা।[১০][১১]

ঈমান[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল ঈমান শব্দের আভিধানিক অর্থ স্বীকার করা, স্বীকৃতি দেওয়া, মতান্তরে দৃঢ় বিশ্বাস করা। ইসলাম ধর্মে ঈমানের অর্থ অত্যন্ত ব্যাপক[১২]। ঈমানের সাতটি স্তম্ভ হচ্ছেঃ[১৩][১৪][১৫][১৬]

  • এক. একক ইলাহ হিসেবে আল্লাহকে বিশ্বাস করা।
  • দুই. আল্লাহর ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস করা।
  • তিন. সমস্ত আসমানী কিতাব সমূহতে বিশ্বাস।
  • চার. সকল নবী ও রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস।
  • পাঁচ.তাক্বদীর বা ভালো মন্দের ওপর আল্লাহর ক্ষমতা রয়েছে বলে বিশ্বাস করা।
  • ছয়. আখিরাত বা পরকালের প্রতি বিশ্বাস।
  • সাত. মৃত্যুর পর পুনঃজীবিত হওয়ার প্রতি বিশ্বাস।

আল-কোরআনের সূরা-বাকারা এর দুই হতে চার আয়াতে ঈমান সম্পর্কে এই বিষয় গুলি উল্লেখ করা হয়েছে।

জিবরাইলের হাদিস[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

আল্লাহ নামের ফটোগ্রাফি।

জিব্রাইলের হাদিসে "হে আল্লাহর রসূল, ইসলাম কি?" প্রশ্নের উত্তরে ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ (তাওহিদ, সালাত, সাওম, জাকাত, হজ) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই হাদিসটিকে কখনও কখনও "সত্যিকারের প্রথম এবং সবচেয়ে মৌলিক আক্বীদা" বলা হয়।[১৭]

সালাত[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল নামাজ/নামায বা সালাত বা সালাহ ইসলাম ধর্মের একটি দৈনিক নিয়মিত ইবাদত। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে হয় যা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে। এটি মুসলমানদের জন্য প্রতিদিন অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ। তবে প্রতিদিন আবশ্যকরণীয় বা ফরজ ছাড়াও বিবিধ নামাজ রয়েছে যা সময়ভিত্তিক বা বিষয়ভিত্তিক।

সালাত একটি সুনির্দিষ্ট প্রকৃতির ইবাদত যার পদ্ধতি ‘ইসলামী শরী‘আতে পরিপূর্ণভাবে বর্ণিত হয়েছে। নামাজ ‘তাকবিরে তাহরিমা’ দ্বারা শুরু হয় ও ‘সালাম ফিরানো’ দ্বারা শেষ হয়’।[১৮]

নামাজ (সালাত) ইসলামের পাঁচটি রোকনের মধ্যে দ্বিতীয় রোকন৷ নামাজ প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পন্ন, নারী পুরুষ নির্বিশেষে, প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরণীয়।

সাওম[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল রোযা বা রোজা (ফার্সি روزہ রুজ়ে), সাউম বা সাওম (আরবি صوم স্বাউম্‌, অর্থঃ সংযম), বা সিয়াম ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির তৃতীয়। সুবহে সাদেক বা ভোরের সূক্ষ আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোযা। ইসলামী বিধান অনুসারে, প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য রমযান মাসের প্রতি দিন রোজা রাখা ফরজ, (فرض ফ়ার্দ্ব্‌) যার অর্থ অবশ্য পালনীয়।

যাকাত[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল যাকাত (টেমপ্লেট:Lang-ar zakāt, "যা পরিশুদ্ধ করে", আরও টেমপ্লেট:Lang-ar, "সম্পদের যাকাত"[১৯]) হলো ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের একটি। প্রত্যেক স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক মুসলমান নর-নারীকে প্রতি বছর স্বীয় আয় ও সম্পত্তির একটি নির্দিষ্ট অংশ, যদি তা ইসলামী শরিয়ত নির্ধারিত সীমা (নিসাব পরিমাণ) অতিক্রম করে তবে[২০], গরীব-দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে যাকাত বলা হয়।[২১][২২] সাধারণত নির্ধারিত সীমার অধিক সম্পত্তি হিজরি ১ বছর ধরে থাকলে মোট সম্পত্তির ২.৫ শতাংশ (২.৫%) বা ১/৪০ অংশ[২৩][২৪][২৫] বিতরণ করতে হয়। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে হজ্জ্ব এবং যাকাত শুধু শর্তসাপেক্ষ যে, তা সম্পদশালীদের জন্য ফরয বা আবশ্যিক হয়। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনে "যাকাত" শব্দের উল্লেখ এসেছে ৩২ বার। নামাজের পরে সবচেয়ে বেশি বার এটি উল্লেখ করা হয়েছে।[২৬]

হজ্জ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল হজ্ব বা হজ্জ বা হজ (টেমপ্লেট:Lang-ar) ইসলাম ধর্মাবলম্বী অর্থাৎ মুসলমানদের জন্য একটি আবশ্যকীয় ইবাদত বা ধর্মীয় উপাসনা। এটি ইসলাম ধর্মের চতুর্থ স্তম্ভ। শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জীবনে একবার হজ সম্পাদন করা ফরজ বা আবশ্যিক।[২৭][২৮][২৯] আরবি জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ হজের জন্য নির্ধরিত সময়।[৩০][৩১] হজ পালনের জন্য বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা নগরী এবং সন্নিহিত মিনা, আরাফাত, মুযদালিফা প্রভৃতি স্থানে গমন এবং অবস্থান আবশ্যক। এটি পৃথিবীর বাৎসরিক তীর্থযাত্রা।[৩২] শারীরিক ও আর্থিকভাবে হজ পালনে সক্ষম হয়ে ওঠার অবস্থাকে ইস্তিতাহ বলা হয় এবং যে মুসলমান এই শর্ত পূরণ করে তাকে মুস্তি বলা হয়। হজ হ'ল মুসলিম জনগণের সংহতি, এবং আল্লাহর নিকটে তাদের আনুগত্যের প্রদর্শনী।[৩৩][৩৪] যিনি হজ সম্পাদনের জন্য গমন করেন তাকে বলা হয় হাজী। হজ শব্দের অর্থ "একটি যাত্রায় অংশ নেওয়া", যা ভ্রমণের বাহ্যিক কাজ এবং উদ্দেশ্যগুলির অভ্যন্তরীণ কাজ উভয়কেই বোঝায়।[৩৫]

অন্যান্য মূলনীতি[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

জিহাদ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল জিহাদ (টেমপ্লেট:Lang-ar), যার অর্থ সংগ্রাম; কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য লাভের জন্য সমগ্র শক্তি নিয়োগ করাকে বোঝানো হয়। এর আভিধানিক অর্থ পরিশ্রম,সাধনা,কষ্ট, চেষ্টা ইত্যাদি। তবে সচরাচর ইসলামী পারিভাষিক অর্থে 'জিহাদ' কথাটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কুরআনে জিহাদের কথা ৪১ বার উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে "আল্লাহের পথে সংগ্রাম করা" অর্থে 'জিহাদ' কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে।[৩৬][৩৭] জিহাদের সাথে জড়িত ব্যক্তিকে মুজাহিদ বলা হয়। জিহাদকে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসাবে গণ্য করা হয়। কুরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যা অনুযায়ী স্থানভেদে জিহাদ তিন রূপ হতে পারেঃ (ক) পাপ থেকে বেঁচে থাকার জন্য স্বীয় কৃপ্রবৃত্তির বিরূদ্ধে জিহাদ, (খ) মুসলিম সমাজকে উন্নয়নের সংগ্রাম, এবং (গ) যুদ্ধক্ষেত্রে সংগ্রাম। [৩৮]

দাওয়াত[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল দা'ওয়াহ বা দাওয়াহ (টেমপ্লেট:Lang-ar) মানে ইসলামের প্রচার। দা'ওয়াহ আক্ষরিক অর্থে "আমন্ত্রণ" করাকে বোঝায়, ক্রিয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণ যার অর্থ বিভিন্নভাবে "ডাকা" বা "আমন্ত্রণ জানানো"। একজন মুসলিম যিনি ধর্মীয় কর্মী হিসাবে বা স্বেচ্ছাসেবক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টায় দা'ওয়াহ অনুশীলন করেন, তাকে দাঈ, বহুবচন দুʿআত বলা হয়। এইভাবে একজন দাঈ এমন একজন ব্যক্তি যিনি মানুষকে একটি সংলাপ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইসলাম বোঝার জন্য আমন্ত্রণ জানান, এবং কিছু ক্ষেত্রে মিশনারির ইসলামিক সমতুল্য হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে, যিনি মানুষকে বিশ্বাস, প্রার্থনা বা ইসলামিক জীবনে আমন্ত্রণ জানান।[৩৯]

ইলমুল আখিরাত বা পরকালবিদ্যা[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল আখিরাত (টেমপ্লেট:Lang-ar) একটি ইসলামী শব্দ যেটির দ্বারা মৃত্যু পরবর্তী জীবনকে বোঝানো হয়।[৪০] মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী আখিরাত বা পরকালের জীবনের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। আখিরাতে মানুষের দুনিয়ার কাজকর্মের হিসাব নেওয়া হবে এবং অতঃপর ভালো কাজের জন্য পুরস্কার এবং মন্দ কাজের জন্য শাস্তি দেওয়া হবে।

গুরুত্ব[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

ইসলামী সকল পণ্ডিতগণ বলে থাকেন যে, প্রথমত আকীদা বা বিশ্বাস দ্বিতীয়ত মানহাজ বা পদ্ধতি সঠিক না হলে আমল আল্লাহর নিকট কবুল হয় না। অর্থাৎ আমল কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হলো প্রথমত আকীদা বা বিশ্বাস ঠিক হওয়া ও দ্বিতীয়ত মানহাজ বা পদ্ধতি ঠিক হওয়া। সালাফি আলেমদের মতে, মানহাজ বা পদ্ধতির দ্বারাই আকীদা বা বিশ্বাস নির্ধারিত হয়, তাই তারা বলেন, সকল কাজের মানহাজ বা পদ্ধতির ক্ষেত্রে সালাফদের পূর্নাঙ্গ অনুসরণ করা উচিৎ, কারণ তাদের মতে, একমাত্র এর মাধ্যমে ইসলামী সঠিক আকীদা বা বিশ্বাস ধারণ করা ও আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য আমল সম্পাদন করা সম্ভব।

মনজুর এলাহি তার "সমাজ সংস্কারে সঠিক আকীদার গুরুত্ব" বইতে "সমাজ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা ও সে ক্ষেত্রে সঠিক ইসলামী আকীদার ভূমিকা ও গুরুত্ব" সম্পর্কে বলেন,[৪১]


আকিদার মতবাদসমূহ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল

প্রথাগত সুন্নি মতবাদসমূহ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

  1. কালাম (সুন্নি)
    1. আশআরী(সুন্নি)
    2. মাতুরিদি (সুন্নি)
  2. আছারী (সুন্নি)

সুন্নি মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে, আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের (ইসলামে যাকে "ঈমান" বলা হয়) ছয়টি দিক রয়েছে: আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ফেরেশতাদের উপর বিশ্বাস, ঐশ্বরিক মাধ্যম হতে আগত গ্রন্থসমূহ (ইসলামে যাকে "আসমানী কিতাব" বলা হয়), যেমন- তাওরাত, যাবুর, ইনজিল ও কুরআনের প্রতি বিশ্বাস, নবীরাসুলদের উপর বিশ্বাস, "অন্তিম সময়" বা শেষ যুগের উপর বিশ্বাস (ইসলামে "কিয়ামত" বলা হয়) এবং পূর্বনির্ধারিত সময় বা পুনরুত্থানের উপর বিশ্বাস।

কালাম[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল টেমপ্লেট:আরও দেখুন কালাম, অর্থাৎ ইলমুল কালাম (বাচনের প্রজ্ঞা) হচ্ছে ধর্মতত্ত্বের মূলনীতিসমূহকে পারষ্পারিক যুক্তিতর্কের মাধ্যমে অনুসন্ধান করার ইসলামি দর্শনআরবি ভাষায়, কালাম শব্দের অর্থ হলো "কথা"। কালামে পারদর্শী পন্ডিতকে বলা হয় মুতাকাল্লিম (মুসলিম ধর্মতত্ত্ববিদ, বহুবচনে মুতাকাল্লিমীন)।

মনজুর এলাহি তার "সমাজ সংস্কারে সঠিক আকীদার গুরুত্ব" বইতে কালামশাস্ত্র সম্পর্কে বলেন,[৪২]


মুতাজিলা[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল

  1. ইবাদি (খারেজি)

মুজাতিলা মতাবলম্বীরা মানুষ ও তাদের স্রষ্টার মধ্যকার সম্পর্কের মধ্যে অদৃষ্টবাদের উপর মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাকে জোড় দেয় এবং ঈশ্বরের অসীম ক্ষমতার উপর ঈশ্বরের ন্যায়বিচারকে অর্পণ করে। মুতাজিলা মতাবলম্বীরাও কুরআনের প্রকৃত অর্থ নির্ধারণের জন্য যুক্তির ব্যবহারে বিশ্বাস করে। এটি এবং ইজতিহাদের মূলনীতি, তাদের গতিশীল ফিকহের প্রতি বিশ্বাসের দিকে পরিচালিত করেছিল।

আশআরী[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল আশʿআরিবাদ বা আশআরী আকিদা বা আশʿআরি ধর্মতত্ত্ব[৪৩][৪৪] (টেমপ্লেট:Lang-ar বা ٱلْأَشَاعِرَة{{#if:|‎}}টেমপ্লেট:বিষয়শ্রেণী পরিচালনাকারী) হল সুন্নি ইসলামের প্রধানতম ধর্মতাত্ত্বিক মাজহাব যা শাস্ত্রীয় কর্তৃত্ব, যৌক্তিকতাটেমপ্লেট:Sfn[৪৫] এবং অর্ধ-যুক্তিবাদেরটেমপ্লেট:Sfn[৪৬][৪৭][৪৮] ভিত্তিতে সর্বজনগৃহীত আকিদাগত দিকনির্দেশনা প্রদান করে।[৪৯] আরব ধর্মতত্ত্ববিদ আবুল হাসান আল-আশআরি এই মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেন।[৫০] এই মতাবলম্বীদের আশʿআরিটেমপ্লেট:Sfn এবং মতবাদকে আশʿআরি মাজহাবটেমপ্লেট:Sfn নামেও অবিহিত করা হয়। আশʿআরিবাদ সুন্নি ইসলামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্মতাত্ত্বিক চিন্তাধারা।[৫১] এটিকে মাতুরিদিটেমপ্লেট:Sfnটেমপ্লেট:Sfnআসারি মাজহাবের পাশাপাশি সুন্নি ইসলামের অন্যতম অর্থোডক্স ধর্মতাত্ত্বিক মাজহাব হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[৫২]

মাতুরিদি[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল মাতুরিদি (টেমপ্লেট:Lang-ar) হল সুন্নি ইসলামের অন্তর্গত অন্যতম প্রধান ধর্মতাত্ত্বিক মাজহাব। এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন আবু মনসুর আল-মাতুরিদি যিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নিদের মধ্যে ইতোমধ্যে বিদ্যমান আকিদাগুলোকে একটি সুসংবদ্ধ কালামশাস্ত্রীয় চিন্তাধারায় উপনীত করেন এবং যৌক্তিকতা[৫৩]যুক্তিবাদের[৫৪][৫৫] ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মাতুরিদি মতবাদকে আশআরি মতবাদের পাশাপাশি সর্বজনগৃহীত বা অর্থডক্স সুন্নি আকিদা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[৫৬]

মাতুরিদিবাদ পারস্যের সুন্নি মুসলমান, হানাফিআহলে আর রায়ের মাঝে বরাবরই প্রভাবশালী ছিল এবং অটোমান সাম্রাজ্যমোগল সাম্রাজ্যে অগ্রগণ্য মাজহাবের মর্যাদা লাভ করেছিল। এর বাইরে অধিকাংশ তুর্ক, মধ্য এশীয়দক্ষিণ এশীয় সুন্নি মুসলমানরা মাতুরিদি আকিদায় বিশ্বাসী। আরব মুসলিমদের মধ্যেও মাতুরিদিবাদী পণ্ডিত বিদ্যমান।[৫৭]

পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, তুর্কিস্তান, আমু দরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাসমূহ, যেমন: উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, বুখারা, সমরকন্দ, তাশখন্দ, তিরমিজ ইত্যাদি অঞ্চলের অধিকাংশ মুসলমান মাতুরিদি মতাবলম্বী।

আছারী[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল টেমপ্লেট:আরও দেখুন আসারি (টেমপ্লেট:Lang-ar, স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "lang" নামক কোনো মডিউল নেই।), অন্যান্য নাম: সনাতনবাদী ধর্মতত্ত্ব, প্রথাবাদী ধর্মতত্ত্ব, ঐতিহ্যবাদী ধর্মতত্ত্ব, পরম্পরাবাদী ধর্মতত্ত্ব বা মূলগ্রন্থবাদী ধর্মতত্ত্ব বা ইসলামী অক্ষরবাদী ধর্মতত্ত্ব, হলো একটি ইসলামি পাণ্ডিত্যনির্ভর আন্দোলন, যা ৮ম শতাব্দীর শেষের দিকে উদ্ভূত হয়, যারা কুরআনহাদিসের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে জাহির অর্থবাচকতার সমর্থনের ফলশ্রুতিতে ইলমুল কালামকে প্রত্যাখ্যান করে থাকে। [৫৮][৫৯] এই নামটি কৌশলগত দৃষ্টিকোণ হতে আরবি শব্দ "হাদিস"-এর অনুবাদ হিসেবে আছার (প্রথা বা ঐতিহ্য) নামক শব্দ থেকে এসেছে। একে মাঝেমধ্যে অন্যান্য নামেও ডাকা হয়, যেমন সহীহ আকীদা, সালাফী আকীদা, আহলে হাদীস আকীদা, সালফে সালেহীনদের আকীদা ইত্যাদি।

ঐতিহ্যবাদী ধর্মতত্ত্বের অনুসারীগণ কুরআনের জাহির (আক্ষরিক, প্রত্যক্ষ) অর্থে বিশ্বাস করে এবং হাদিস হলো তাদের বিশ্বাস ও আইনকানুনের সকল বিষয়ে বিধিবিধানের একমাত্র ভিত্তি এবং তাদের কাছে যৌক্তিক সমালোচনা হল নিষিদ্ধ, এমনকি যদি তা সত্য যাচাই করার জন্য হয় তবুও।[৬০] তাঁরা কুরআনকে আক্ষরিক অর্থে পড়ে থাকে এবং তাঁরা কুরআনকে রূপকার্থে ব্যাখ্যা করার (তাউইল) বিরোধিতা করে। তাঁরা কুরআনের অর্থকে যুক্তির ভিত্তিতে ধারণা করার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকে এবং তারা বিশ্বাস করে যে, তাদের বাস্তবতা শুধু আল্লাহর কাছে সমর্পণ করা উচিত, যাকে তাফউইদ বলা হয়।[৬১] মোটকথা, কুরআন ও হাদিসের লেখনীকে তাঁরা কোনো রকম প্রশ্ন করা ব্যতিরেকে গ্রহণ করে থাকে, যাকে বলা হয় "বি-লা কাইফা", যার ফলে এই মতবাদটিকে কুরআনীয় অক্ষরবাদী বা ইসলামী অক্ষরবাদী মতবাদও বলা হয়ে থাকে।

ঐতিহ্যবাদী ধর্মতত্ত্ব বা আসারি মতবাদ মুহাদ্দিসদের মাঝে বিস্তৃতি লাভ করে, যারা পরবর্তীতে আহমদ ইবনে হাম্বলের (৭৮০-৮১৫) অনুসরণে "আহলুল হাদিস" নামে একটি আন্দোলনের মাধ্যমে সংগঠিত হন।[৬২] ধর্মবিশ্বাসের বিষয়সমূহে, তাঁরা মুতাজিলা ও সমসাময়িক অন্যান্য ধর্মতত্ত্বের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল, এবং তারা সেসকল ধর্মতত্ত্বের মূলনীতির বিভিন্ন বিষয়কে দোষারোপ করতো, যার মধ্যে অন্যতম ছিল অন্যান্যদের নিজস্ব আত্মরক্ষামূলক যুক্তিনির্ভর ব্যাখ্যাপদ্ধতি।[৬২] ১০ম শতাব্দীতে, আশআরীমাতুরিদি ধর্মতত্ত্ব মুতাজিলা যুক্তিবাদ ও হাম্বলি আক্ষরিকতাবাদের মাঝখানে মুতাজিলাদের যুক্তিনির্ভর ব্যখাপদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে মধ্যস্থতা তৈরি করে, যাকে মুতাজিলাগণ আছারীদের অধিকাংশ বিশ্বাসকে প্রতিহত করতে ব্যবহার করত।[৬৩] যদিও যে সকল হাম্বলি পণ্ডিত এই সংমিশ্রণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল তাঁরা ছিল সংখ্যালঘু, তাদের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি তাদের আবেগপ্রবণ ও বর্ণনা-ভিত্তিক পদক্ষেপ কিছু এলাকার শহুরে লোকজনের মধ্যে প্রভাবশালী অবস্থায় থেকে গিয়েছিল, আর তা ছিল প্রধানত আব্বাসীয় খিলাফতের শাসনামলে বাগদাদ এলাকায়।[৬৪]

যদিও আশআরীমাতুরিদি মতবাদকে প্রায়শই সুন্নি "সনাতন ধারা" বলে ডাকা হয়, আছারী মতবাদও এদের পাশাপাশি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, যার অনুসারীরা একে সনাতন সুন্নি ধর্মবিশ্বাস বলে দাবি করে আসছে।[৬৫] আধুনিক যুগে, ইসলামী ধর্মতত্ত্বের উপর আছারী মতবাদের একটি ধারণাতীত প্রভাব রয়েছে, যা ওয়াহাবি ও অন্যান্য সমসাময়িক ঐতিহ্যবাদী (আসারি) সালাফি অনুসারীদের দ্বারা অনুসৃত হচ্ছে এবং তা হাম্বলি মতাদর্শের সীমা অতিক্রম করে আরও বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।[৬৬]

আছারী আকীদা সম্পর্কে ছালিহ ইবনে ফাউজান আল-ফাউজান বলেন, "যে ব্যক্তি শুধু ভালোবাসা নিয়ে আল্লাহর ইবাদত করবে, সে সুফী বলে গণ্য হবে। যে ব্যক্তি শুধু ভয় নিয়ে আল্লাহর ইবাদত করবে, সে খারেজী। যে শুধু আশা-আকাঙ্খা নিয়ে আল্লাহর ইবাদত করবে, সে মুর্জীয়া। আর যে ভালোবাসা, ভয়-ভীতি, এবং আশা-আকাঙ্খা নিয়ে আল্লাহর ইবাদত করবে, সেই প্রকৃত মুমিন।"[৬৭]

শিয়া[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

  1. জাফরি (শিয়া; ইসমাইলিসহ)
  2. জায়েদি (শিয়া)
  3. দ্বাদশী (উসূল আল দীন) (শিয়া)

শিয়া মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের পাঁচটি দিক রয়েছে: ঐশ্বরিক একত্ব (ইসলামে যাকে "তাওহিদ" বলা হয়), ন্যায়বিচার, নবুওয়ত (নবিত্ব), ইমামত্বপরকালবিদ্যা

জায়েদি[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল জায়েদি (টেমপ্লেট:Lang-ar; পঞ্চমী নামে পরিচিত) হল শিয়া ইসলামের একটি শাখা যা ধর্মতাত্ত্বিক দিক দিয়ে ইবাদিমুতাজিলা চিন্তাধারার এবং ফিকহশাস্ত্রীয় ক্ষেত্রে হানাফি মাজহাবের নিকটবর্তী। অষ্টম শতাব্দীতে শিয়া চিন্তাধারা থেকে জায়েদি মতবাদ উৎপত্তিলাভ করে।[৬৮] তৃতীয় ইমাম হোসাইন ইবনে আলীর দৌহিত্র এবং চতুর্থ ইমাম আলী ইবনে হোসাইনের পুত্র জায়েদ ইবনে আলীর নামানুসারে জায়েদিদের নামকরণ করা হয়।[৬৮] জায়েদি মাজহাবের অনুসারীদের জায়েদি শিয়া নামে অবিহিত করা হয়। জায়েদিরা ইয়েমেনের মোট মুসলিম জনসংখ্যার ৫০% যা দেশটির বৃহত্তম শিয়া মুসলমান সম্প্রদায়৷[৬৯][৭০]

বাতেনি[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল বাতিন (টেমপ্লেট:Lang-ar) শব্দের আক্ষরিক অর্থ- "ভিতর", "অভ্যন্তরীণ", "লুকানো" ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ, কুরআনের বাহ্যিক বা আপাত অর্থে, যহিরের বিপরীতে একটি লুকানো অর্থও আছে। সুফিরা বিশ্বাস করে যে প্রত্যেক ব্যক্তির আত্মার জগতে একটি বাতিন আছে। ইহা ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ সত্ত্বা; যখন আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শকের আলো দ্বারা শুদ্ধ করা হয়, তখন তা আধ্যাত্মিকভাবে উন্নীত হয়।[৭১][৭২] এই ধারণা লুকানো আল্লাহর গুণাবলীর সাথে সংযুক্ত, যাকে দেখা যায় না কিন্তু জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিদ্যমান।

ইসনা আশারিয়া[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল

ইসনা আশারিয়াত যার বাংলা অর্থ দ্বাদশী (টেমপ্লেট:Lang-ar; টেমপ্লেট:Lang-fa), যা ইমামিয়াত (টেমপ্লেট:Lang-ar) নামেও পরিচিত, হল শিয়া ইসলামের বৃহত্তম শাখা। দ্বাদশী শব্দটি দ্বারা এর অনুসারীদের বারোজন ঐশ্বরিকভাবে মনোনীত নেতা তথা বারো ইমামে বিশ্বাস এবং সর্বশেষ ইমাম মুহম্মদ আল-মাহদীকে অন্তর্হিত ইমাম ও প্রতীক্ষিত মাহদী হিসেবে বিশ্বাস করাকে বোঝানো হয়। শিয়া ঐতিহ্য অনুসারে মাহদীর শাসনামল নবী ঈসার দ্বিতীয় আগমনের সমসাময়িক হবে এবং ঈসা মাহদীকে দজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহযোগিতা করবেন।

ইসনা আশারিয়ারা বিশ্বাস করে যে বারো ইমাম হলেন নবী মুহাম্মদের আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক উত্তরসূরী। এই ধর্মতত্ত্ব অনুযায়ী বারো ইমাম অনুকরণীয় মানবীয় ব্যক্তিত্ব যাঁরা ন্যায়বিচারের সাথে সমাজ পরিচালনার পাশাপাশি শরীয়তকোরআনের গূঢ়ার্থ সংরক্ষণ ও ব্যাখ্যা করতে সক্ষম। মুহাম্মদ ও ইমামদের কথা ও কাজ (সুন্নত) জনসমাজের জন্য অনুসরণীয় পথপ্রদর্শক ও আদর্শ; ফলে তাঁদের অবশ্যই ত্রুটি ও পাপমুক্ত হতে হবে এবং অবশ্যই মুহাম্মদের মাধ্যমে ঐশী ফরমান বা নাস দ্বারা মনোনীত হতে হবে।[৭৩][৭৪][৭৫]

ইসনা আশারিয়া মতবাদ শিয়া ইসলামের বৃহত্তম শাখা যা গোটা শিয়া সম্প্রদায়ের ৮৫% এবং সংখ্যায় প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ মিলিয়ন।[৭৬][৭৭][৭৮][৭৯]

জাহমি[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল জাহমি (টেমপ্লেট:Lang-ar) একটি মতবাদ। জা’দ ইবন দিরহাম (১১৮ হি) নামক একজন নতুন প্রজন্মের পারসিক মুসলিম মহান আল্লাহর গুণাবলি অস্বীকার করে তাঁকে ‘নির্গুণ’ বলে দাবি করতে থাকেন। তার ছাত্র জাহম ইবন সাফওয়ান সামারকান্দী (১২৮ হি)।[৮০] তিনি এ মতটিকে জোরালোভাবে প্রচার করতে থাকেন এবং এর সাথে অনেক দর্শনভিত্তিক মতবাদ তিনি প্রচার করেন।

ক্বাদারিয়া[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণকারী হিসেবে ইসলামে কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে। তাদের কাদারিয়া বলা হয় কারণ তারা এই মত পোষণ করেন মানুষের কাজ করার 'কাদর' বা শক্তি আছে।[৮১][৮২] এই মতবাদের প্রবক্তারা মানুষের ইচ্ছা বা কর্মের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কাদারিয়াদের মতে, আল্লাহ বা বিধাতা কাজের জন্য সরাসরি দায়ী হতে পারেন না, কারণ কাজ ভালো বা মন্দ উভয়ই হতে পারে। মানুষ তার নিজের কাজের মালিক কিন্তু তার কাজ করার ক্ষমতা বিধাতা কর্তৃক প্রদত্ত। এই অর্থে বিধাতা চূড়ান্তভাবে কাজের কর্তা বা মালিক। কোনো বহিঃশক্তি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে মানুষ তার নিজের কাজের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে তার নিজস্ব শক্তি আছে।[৮৩] এই সম্প্রদায়ের কেউ কেউ দাবি করেন যে মানুষের কাছে কিছু ঐশী ক্ষমতা হস্তান্তর বা অর্পণ করা হয়েছে এবং মানুষের যেটা সঠিক এবং যেটা ভুল তা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিঃশর্ত বিবেচনামূলক ক্ষমতা আছে।[৮৪] তাদের কিছু মতবাদ পরে মু'তাজিলিদের দ্বারা গৃহীত হয় এবং আশআরিয়দের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়।[৮৩]

কাদারিয়া ইসলামের প্রথমদিকে দার্শনিক ধর্মতত্ত্বের একটি। এই আন্দোলন নিয়ে পাওয়া প্রাচীনতম দলিল হচ্ছে হাসান আল-বসরির রিসালা, যা ৭৫/৬৯৪ থেকে ৮০/৬৯৯ এর মধ্যে লেখা হয়। অবশ্য ইসলামে মুক্ত ইচ্ছা নিয়ে বিতর্ক এই লেখার পূর্বে পাওয়া যায়।

সুন্নি সূত্র মতে, জরাথুস্ট্রবাদের সাথে তুলনা দিয়ে মুহাম্মদ নিজেই এর নিন্দা জানিয়েছেন।[৮৫] সুনান আবু দাউদে বর্ণিত হয়েছে: "আব্দুল্লাহ ইবনে উমর: নবী বলেন, "কাদারিয়াহ হল এই সম্প্রদায়ের মাজিয়ান। যদি তারা অসুস্থ হয়, তবে তাদের কাছে যাবেন না, আর যদি তারা মারা যায় তবে তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যাবেন না।"

মুহাক্কিমা[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

বিচারের ঘটনার শেষে যে দলগুলো আলীর সেনাবাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল তারা মুহাক্কিমা (আরবি: محكمة) নামক শাখা গঠন করেছিল। তারা প্রধানত খারেজী ও ইবাদি নামে দুটি প্রধান সম্প্রদায়ে বিভক্ত।

খারেজি[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল খারিজি (টেমপ্লেট:Lang-ar, আল-খাওয়ারিজ, একবচন خارجي{{#if:|‎}}টেমপ্লেট:বিষয়শ্রেণী পরিচালনাকারী, খারিজি), আশ-শুরাহও বলা হয় (টেমপ্লেট:Lang-ar "যে (টাকা) ভাঙিয়ে দেয়") শব্দ দ্বারা ইসলামের প্রথম যুগে উদ্ভব হওয়া একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে বুঝায়। ৭ম শতাব্দীতে এই গোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছিল। ইরাকের দক্ষিণাশে তারা কেন্দ্রীভূত হয়েছিল। সুন্নিশিয়াদের থেকে খারিজিরা ভিন্ন মত পোষণ করত। পরবর্তীতে সময়ের সাথে সাথে খারিজিরা সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়। খলিফা আলি ইবনে আবি তালিবের শাসন শুরু হওয়ার পর তারা প্রথমে তা মেনে নেয়, তবে পরে তার শাসন প্রত্যাখ্যান করে। আলি নিজেও আবদুর রহমান ইবনে মুলজাম নামক একজন খারিজির হাতে নিহত হন।

ইবাদি[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল ইবাদি ইসলাম (টেমপ্লেট:Lang-ar), ইবাদি মতবাদ বা ইবাদি আন্দোলন হল ইসলামের একটি শাখা যা ওমানে সবচেয়ে প্রভাবশালী।[৮৬] এছাড়া আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়াপূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে এর অস্থিত্ব রয়েছে। বলা হয়ে থাকে যে এই আন্দোলন ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে বা মহানবী হজরত মুহম্মদের (স.) মৃত্যুর ২০ বছর পর শুরু হয় যা সুন্নিশিয়া মতবাদের চেয়েও প্রাচীন।[৮৭] আধুনিক ঐতিহাসিকেরা এর উৎপত্তি সন্ধান করতে গিয়ে একে খারিজি আন্দোলনের একটি মধ্যপন্থী ধারা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।[৮৮][৮৯][৯০]টেমপ্লেট:Rp সমসাময়িক ইবাদিরা তাদের খারিজি হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করার তীব্র বিরোধিতা করেন, যদিও তারা স্বীকার করেন যে তাদের আন্দোলন ৬৫৭ খ্রিষ্টাব্দের খারিজি বিদ্রোহ থেকে উৎপত্তিলাভ করেছে।[৯০]টেমপ্লেট:Rp

ইবাদি ইসলামের একটি ক্ষুদ্র মাযহাব। এই মাযহাব সুন্নি বা শিয়া পন্থার অন্তর্ভুক্ত নয়। এর আবির্ভাব ইবাদি আন্দোলন থেকে। এই আন্দোলন মহানবীর প্রয়াণের ২০ বছর পর শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। আব্দুল্লাহ ইবন ইবাদ আল-তামিমিকে এই মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা মনে করা হয়। কিন্তু এই মাযহাবের অনুসারীরা দাবি করেন যে এর প্রতিষ্ঠাতা জাবির ইবন জাইদ আল-আজদি। এই মতবাদের ওপর খারিজিদের প্রভাব আছে বলে মনে করা হয়।[৯১] ইবাদিরা নিজেদের "মুসলমান" বা "সরলতার লোক" বলে উল্লেখ করেন।[৯২][৯৩]

মুরজিয়া[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

মুরজিয়াহ (আরবি: المرجئة) ছিল একটি প্রাথমিক ইসলামী বিদ্যালয় যার অনুসারীরা আরবিতে "মুরজিউন" বা "আল-মুরজিউন" (المرجئون) নামে পরিচিত। পাপ এবং ধর্মত্যাগের (রিদা) মধ্যে সম্পর্ক বিষয়ে এটি খারিজিদের প্রাথমিক প্রশ্নের জবাবে মুরজিয়া একটি ধর্মতাত্ত্বিক বিদ্যালয় হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল। মুরজিয়াহরা বিশ্বাস করতেন যে পাপ একজন ব্যক্তির বিশ্বাস (ইমান) প্রভাবিত করে না বরং তাদের পূণ্য বা তাকওয়াই ইমানকে প্রভাবিত করে। অতএব, তারা "বিলম্বিত রায়" (ইরজা) ধারণার পক্ষে ছিল। মুর্জিয়ারা বলে যে, যে কেউ ন্যূনতম ঈমান ঘোষণা করে তাকে অবশ্যই মুসলমান হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং শুধু পাপই কাউকে কাফের করতে পারে না। মুরজিয়ার মতবাদ শেষ পর্যন্ত খারিজিদের উপর প্রাধান্য পায় এবং সুন্নি ইসলামের মূলধারার মত হয়ে ওঠে। সুন্নি ধর্মতত্ত্বের পরবর্তী বিদ্যালয়গুলো তাদের অবস্থানকে নিজেদের ভেতরে গ্রহণ করে এবং তা থেকে আরও বিকশিত ধর্মতাত্ত্বিক বিদ্যালয় এবং ধারণা তৈরি করে।

তাশবিহ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

তাশবিহ (আরবি: تشبيه) একটি ইসলামিক ধর্মীয় ধারণা যার অর্থ নৃতাত্ত্বিকতা, ঈশ্বরকে তাঁর সৃষ্টির সাথে একীভূত করা/তুলনা করা। ইসলামী ধর্মতত্ত্বে, দুটি বিপরীত শব্দ আল্লাহর প্রতি আরোপিত হয়, তাশবিহ এবং তানজিহ (অতিক্রম)।

তাশবিহের পূর্ণ অর্থ হল 'সাদৃশ্য নিশ্চিত করা', অর্থাৎ ঈশ্বর ও তাঁর সৃষ্টির মধ্যে সাদৃশ্য নিশ্চিত করা। এই ধারণাটি চিরন্তনভাবে আল্লাহর তানজিহ (অতিক্রম বা 'অসংগতি ঘোষণা') এর সাথে যুক্ত।

তা'তিল, ঈশ্বরকে তাঁর গুণাবলী থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া এবং তাশবিহ, নৃতাত্ত্বিকতা, উভয়কেই সুন্নিদের দ্বারা ধর্মদ্রোহিতা বলে মনে করা হয়।

শিয়া শিক্ষায় তাশবিহ বহুল প্রচলিত ছিল, বিশেষ করে ৮ম শতকের খ্রিস্টাব্দের জাইদি ইমাম আল-কাসিম আল-রাসি-এর চিন্তাধারায়।

কারিমিয়াত[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

কাররামিয়াহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন কাররাম। ইবনে কাররাম মনে করতেন যে ঈশ্বর একটি পদার্থ এবং যখন তিনি আরশের সংস্পর্শে আসেন তখন নির্দিষ্ট দিকে তাঁর একটি সসীম দেহ (জিসম) ছিল।

চরমপন্থী শিয়া ইতিহাসে আল্লাহর মানবরূপ ধারণ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

অবতারের বিশ্বাস প্রথমে সাবাইয়াতে আবির্ভূত হয়েছিল, এবং পরে কিছু ব্যক্তিত্বকে যেমন মুহাম্মদ ইবনে আল-হানাফিয়া, আবু মুসলিম, সানপদ, ইসহাক আল-তুর্ক, আল-মুকান্না, বাবাক খোররামদিন, মাজিয়ার এবং প্রথম ইসমাইলকে আল্লাহর অবতার হিসেবে গুলাত শিয়াগণ বিশ্বাস করতেন।

আহমদীয়া[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:মূল আহমদীয়া; পূর্ণরূপে আহমদীয়া মুসলিম জামাত ({{#ifeq:yes|no

|উর্দু
|উর্দু

}}: টেমপ্লেট:Nastaliq‬‎{{#if:yes|‎}}টেমপ্লেট:বিষয়শ্রেণী পরিচালনাকারী{{#if:

|, টেমপ্লেট:ছোটস্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "lang" নামক কোনো মডিউল নেই।

}}{{#if:

|, টেমপ্লেট:ছোট''

}}‎; টেমপ্লেট:Lang-ar) একটি মুসলিম ধর্মীয় পুনর্জাগরণ অথবা মসিহবাদী আন্দোলন যার উদ্ভব হয়েছিল ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ব্রিটিশ ভারতের কাদিয়ান এলাকার মির্যা গোলাম আহমদের জীবন ও শিক্ষার ভিত্তিতে। মির্যা গোলাম আহমদ (১৮৩৫-১৯০৮) দাবী করেছিলেন যে আল্লাহ তাকে আখেরী জামানায় প্রতিশ্রুত ও মুসলমানদের প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদীপ্রতিশ্রুত মসীহ (যীশু বা ঈসা) উভয় হিসেবেই প্রেরণ করেছেন ইসলামের চূড়ান্ত বিজয় শান্তিপূর্ণভাবে সংঘটিত করতে এবং অন্যান্য ধর্মীয় মতবাদের প্রতীক্ষিত পরকালতাত্ত্বিক ব্যক্তিত্বদের মূর্ত করতে। নবী মোহাম্মদের বিকল্প নাম 'আহমদ' থেকে এই আন্দোলন ও সদস্যগণ ('আহমদী মুসলিম' বা সংক্ষেপে 'আহমদী') নিজেদের নামকরণ করলেও সাধারণভাবে মুসলিম বিশ্বে তাদের প্রতিষ্ঠাতার জন্মগ্রহণকারী অঞ্চলের নাম কাদিয়ান এর নামে কাদিয়ানী হিসেবেই আখ্যায়িত করা হয়।

আহমদীরা বিশ্বাস করে যে মির্যা গোলাম আহমদ ইসলামকে তার আসল প্রথমযুগীয় অবস্থায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী কিতাবে উল্লেখিত যীশু বা ঈসার গুণবিশিষ্ট ইমাম মাহদী হয়ে এসেছেন ইসলামকে পুনরুজ্জীবিত করতে ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে এর নৈতিক ব্যবস্থা চলমান করতে। তারা আরও বিশ্বাস করে যে মির্যা গোলাম আহমদ ইসলামের শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ(সা.) এর প্রদর্শিত পথে পাঠানো একজন “উম্মতী নবী”। তাদের মতে নবুয়াত খাতামান্নাবিঈন এর অর্থ নবুয়াত এর সমাপ্তি নয় বরং খাতামান্নাবিঈন মানে "নবীগনের মোহর" বা নবীগনের সত্যায়নকারী। তাদের মতে নবী মোহাম্মদ এর প্রকৃত অনুসরনে নতুন নবী আসতে পারবেন তবে তিনি হবেন ‘উম্মতী নবী’ ও তিনি কোনো নতুন শরীয়ত আনবেন না।[৯৪] আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত বা সুন্নীদের মতে, এই ‘উম্মতী নবীর’ ধারণা কুরআনহাদীস দ্বারা সমর্থিত নয় এবং তারা তাদেরকে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত মানে না।[৯৫][৯৬] আহমদীয়াদের মতে যেহেতু তারা কালিমা তৈয়্যিবা ‘লা ইলাহা ইলাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ মনে প্রাণে বিশ্বাস করে বলে তাদের ‘অমুসলিম’ ঘোষণা করার অধিকার কারো নেই।[৯৭]

ইসলামি আকিদা বিষয়ক গ্রন্থ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

সুন্নি রচনা[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

ইসলামি আকিদা বিষয়ে প্রথম বই লেখেন ইমাম আবু হানিফা। বইটি আল ফিকহুল আকবার নামে পরিচিত।[৯৮] আকিদা বিষয়ে অসংখ্য বই লেখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাচীন কয়েকটি বই হল - ইমাম আহমাদ লিখিত "আস-সুন্নাহ", ইমাম আবু দাউদ সুলাইমান লিখিত "আস-সুন্নাহ", ইমাম আবু জাফর ত্বহাবী লিখিত "আকিদাতু আহলিস সুন্নাহ", ইমাম ইবনু রজাব হাম্বালী লিখিত "কিতাবুত তাওহীদ" ইত্যাদি। ইমাম ইবনে আবীল ইয আল-হানাফী ইমাম ত্বহাবীর লেখা আকিদার বইয়ের ব্যাখ্যাগ্রন্থ লিখেছেন যা "শারহুল আকিদা আত্-ত্বহাবীয়া" নামে পরিচিত। এছাড়া সালাফী মতানুসারীদের মাঝে ইবনে তাইমিয়া রচিত আকিদাহ আল-ওয়াসিতিয়াহ, মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব রচিত কিতাবুত তাওহীদ গ্রন্থগুলো প্রসিদ্ধ।

শিয়া রচনা[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

আরও পড়ুন[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:উইকিউক্তি

  1. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  2. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  3. আর এ কারণেই শ্রেণী ৮ এর ক্রিয়াপদ ঈ'তাক্বাদা "দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা", ক্রিয়া বিশেষ্য ইতিকাদ "বিশ্বাস, আত্মিক বিশ্বাস, আস্থা, আত্মবিশ্বাস, স্বাক্ষ্যপ্রমাণ; বিশ্বাসের নীতিমালা, মতবাদ", কালবোধক কৃদন্ত পদ বা participle মু'তাক্বাদ "বিশ্বাস, নীতিমালা, অন্ধবিশ্বাস, প্রমাণ, বিশ্বাস, মত". (উৎস: বেহর, হান্ড, (“عقد”): জে. মিল্টন কোওয়ান (এড.), এ ডিকশনারি অব মডার্ন রিটেন এরাবিক, ৪র্থ সংস্করণ (১৯৭৯))।
  4. টেমপ্লেট:Cite web
  5. টেমপ্লেট:কুরআন উদ্ধৃতি
  6. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  7. Joel Beversluis (ed.) Sourcebook of the World's Religions: An Interfaith Guide to Religion and .... New World Library. pp.68–90
  8. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  9. টেমপ্লেট:বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি
  10. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  11. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  12. Farāhī, Majmū‘ah Tafāsīr, 2nd ed. (Faran Foundation, 1998), 347. (ইংরেজি ভাষায়)
  13. সহীহ বুখারী টেমপ্লেট:ওয়েব আর্কাইভ, সহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ ০২, পর্বঃ ঈমান, হাদিস নাম্বারঃ ৪৮
  14. টেমপ্লেট:Quran-usc (ইংরেজি ভাষায়)
  15. Musnad Ahmad" (ইংরেজি ভাষায়)
  16. টেমপ্লেট:Quran-usc (ইংরেজি ভাষায়)
  17. টেমপ্লেট:Cite book
  18. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  19. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  20. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  21. টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
  22. টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
  23. Medani Ahmed and Sebastian Gianci, Zakat, Encyclopedia of Taxation and Tax Policy, p. 479-481
  24. টেমপ্লেট:Hadith-usc
  25. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  26. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  27. Dalia Salah-El-Deen, Significance of Pilgrimage (Hajj) টেমপ্লেট:ওয়েব আর্কাইভ
  28. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  29. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  30. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  31. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  32. Atlas of Holy Places, p. 29
  33. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  34. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  35. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  36. টেমপ্লেট:বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি, Jihad, p.571
  37. টেমপ্লেট:বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি, Jihad, p.419
  38. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  39. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  40. World Faiths, teach yourself - Islam by Ruqaiyyah Maqsood. টেমপ্লেট:আইএসবিএন, pp. 38–39
  41. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  42. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  43. টেমপ্লেট:Citation
  44. "al-Ashʿari" টেমপ্লেট:ওয়েব আর্কাইভ. Random House Webster's Unabridged Dictionary.
  45. Weeks, Douglas. "The Ideology of Al Muhajiroun." Al Muhajiroun. Palgrave Macmillan, Cham, 2020. 103-140.
  46. Gyekye, Kwame. "Theology and Law in Islam." (1976): 304-306.
  47. Fah̲rī, Mağīd. Ethical theories in Islam. Vol. 8. Brill, 1991.
  48. Hashas, Mohammed. "Is European Islam Experiencing an Ontological Revolution for an Epistemological Awakening?." American Journal of Islamic Social Sciences 31: 4 (2014): 14.
  49. Cyril Glassé, Huston Smith The New Encyclopedia of Islam Rowman Altamira 2003 টেমপ্লেট:ISBN page 63
  50. Tabyin Kadhib al-Muftari fima Nussiba ila al-Imam al-Ash`ari (Ibn 'Asakir)
  51. Juan Eduardo Campo Encyclopedia of Islam New York, NY 2009 টেমপ্লেট:ISBN page 66
  52. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  53. Schlesinger, Sarah J. "The Internal Pluralization of the Muslim Community of Bosnia-Herzegovina: From Religious Activation to Radicalization." Master’s Research Paper. Boston University (2011).
  54. Жусипбек, Галым, Жанар Нагаева, and Альберт Фролов. "Ислам и плюрализм: Что могут предложить идеи школы аль-Матуриди? Журнал Аль-Фараби, Алматы, No 4 (56), 2016 (p. 117-134)." "On the whole, the authors argue that the Maturidi school which is based on 'balanced theological rationalism', 'metaphysics of diversity', 'subjectivity of faith' and 'to be focused on justice and society-centeredness' "
  55. Zhussipbek, Galym, and Zhanar Nagayeva. "Epistemological Reform and Embracement of Human Rights. What Can be Inferred from Islamic Rationalistic Maturidite Theology?." Open Theology 5.1 (2019): 347-365.
  56. টেমপ্লেট:Cite web
  57. টেমপ্লেট:Citation
  58. টেমপ্লেট:Harvtxt
  59. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  60. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  61. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  62. ৬২.০ ৬২.১ টেমপ্লেট:Harvtxt
  63. টেমপ্লেট:Harvtxt; টেমপ্লেট:Harvtxt
  64. টেমপ্লেট:Harvtxt
  65. টেমপ্লেট:Harvtxt: "The Ash‘ari school of theology is often called the Sunni ‘orthodoxy.’ But the original ahl al-hadith, early Sunni creed from which Ash‘arism evolved has continued to thrive alongside it as a rival Sunni ‘orthodoxy’ as well."
  66. টেমপ্লেট:Harvtxt
  67. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  68. ৬৮.০ ৬৮.১ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  69. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  70. http://gulf2000.columbia.edu/images/maps/Yemen_Ethno_Religious_summary_lg.png
  71. Daftary, Farhad (2000). Intellectual traditions in Islam New York: St. Martins Press. টেমপ্লেট:ISBN. p. 90.
  72. Gleave, Robert (2011). Islam and literalism: Literal meaning and interpretation in Islamic legal theory. Edinburgh: Edinburgh University Press. টেমপ্লেট:ISBN. Page 64.
  73. টেমপ্লেট:Harvnb
  74. টেমপ্লেট:Harvnb
  75. টেমপ্লেট:Harvnb
  76. worldatlas.com
  77. worldometers.info
  78. টেমপ্লেট:Harvnb
  79. টেমপ্লেট:Harvnb
  80. টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
  81. জে. এম কাওয়ান (সম্পাদক) (১৯৭৬)। The Hans Wehr Dictionary of Modern Written Arabic। উইসবাডেন, জার্মানি: স্পোকেন ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিসেস। টেমপ্লেট:ISBN
  82. Qadariyah, Britannica.com
  83. ৮৩.০ ৮৩.১ টেমপ্লেট:বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি
  84. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  85. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  86. টেমপ্লেট:Cite news
  87. Donald Hawley, Oman, pg. 201. Jubilee edition. Kensington: Stacey International, 1995. টেমপ্লেট:ISBN
  88. টেমপ্লেট:Cite encyclopedia
  89. টেমপ্লেট:EI2
  90. ৯০.০ ৯০.১ টেমপ্লেট:Cite book
  91. "faith and power",(1982)
  92. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  93. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।টেমপ্লেট:অকার্যকর সংযোগ
  94. Finality of Prophethood
  95. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  96. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।
  97. Ahmadis are True Muslims
  98. Glasse, Cyril (2001).New Encyclopedia of Islam (Revised Edition ed.). Rowman & Littlefield Publishers. p.105.