ইসলামে মধ্যমপন্থা

সালাফিপিডিয়া থেকে

টেমপ্লেট:Usul al-fiqh ইসলামে মধ্যমপন্থা হল ইসলামী শরিয়তের একটি অন্যতম পরিভাষা, এটি হল ইসলামের দৃষ্টিতে সৎ ভারসাম্যপূর্ণ‌ জীবন পদ্ধতি, যা চরমপন্থাকে এড়িয়ে চলে ও বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যমপন্থী অভিজ্ঞতা অর্জ‌নে সহায়তা করে।[১][২][৩]

শব্দতত্ত্ব[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

ওয়াসাত, যা ওয়াসাতিয়াহ হিসেবেও পরিচিত (وسطية) হল একটি আরব শব্দ যার অর্থ মধ্যম, মাঝারি, কেন্দ্রীয়, ভারসাম্যপূর্ণ‌। কাসদ্ (قصد) বা ইকতিসাদ (الاقتصاد) শব্দটিও কুরআন ও হাদীসে মধ্যমপন্থা, পরিমিত ব্যয়, মিতব্যয়, সঞ্চয় অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, যদিও ক্বাসদ শদটির আরও অর্থ রয়েছে নিয়ত, লক্ষ্য, সংকল্প, উদ্দেশ্য, সরল পথ ইত্যাদি বাস্তবে করা সম্ভব এমন কাজের ইচ্ছা ইত্যাদি এবং ইক্বতিসাদ শব্দটি আধুনিক আরবিতে অর্থনীতি অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমনঃ সূরা নাহলের (১৬) ৯ম আয়াতে, সূরা মা'ইদাহর (৫) ৬৬ আয়াতে, সূরা তওবার (৯) ৪২ আয়াতে, সূরা লূকমানের (৩১) ১৯ ও ৩২ আয়াতে, এবং সূরা ফাতিরের (৩৫) ৩২ আয়াতে। এছাড়া ইত্তিদাল ও সাদ্দাদ শব্দ দুটোও হাদীসে মধ্যমপন্থা অর্থে এসেছে, সাদ্দাদ (السداد) শব্দটি অধিকবার ব্যবহৃত হয়েছে, এবং এর একাধিক অর্থ রয়েছে, তা হলো, সঠিক করা, সোজা করা, ঋণ পরিশোধ করা, ছিদ্র বন্ধ করা, কর্ম সম্পাদন করা ইত্যাদি। এর বিশেষ্যরূপ তাসদীদ (التسديد) এর আভিধানিক অর্থ হলো পরিশোধকরণ, দৃষ্টিকে (বা দূরবীণকে) একটি নির্দিষ্ট দিকে নির্দেশ করণ, নিশানায় তীর ন্ছুড়ে লক্ষ ভেদ করা। হাদীসে অনেক স্থানে "সাদ্দিদু ওয়া ক্বারীবু" (سَدِّدُوا وَقَارِبُوا) কথাটি এসেছে যার তর্জমা বা অনুবাদ হিসেবে "সোজা সঠিক পথে চলা বা মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা ও নিকটবর্তী হওয়া" বলা হয়েছে, আবার জামাআতের নামাজের বা সালাতের কাতার সোজা করার জন্য ইমাম ও খতীবের নির্দেশনা হিসেবেও এই কথাটি ব্যবহৃত হয়, এবং বাংলাদেশে নামাজের কাতার সোজা করার সময় মূল আরবি কথাটির পরিবর্তে তর্জমা হিসেবে কাতার সোজা করে দাড়ানো, ফাঁকা স্থানগুলো পূর্ণ করা ও কাছাকাছি আসার কথা বলা হয়। সালিহ আল মুনাজ্জিদ বলেন, "দ্বীনে মধ্যপন্থার অর্থ হল কেউ বাড়াবাড়ি না করে এবং আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা অতিক্রম না করে এবং কেউ এটিকে অবহেলা না করে এবং আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা থেকে পিছিয়ে না থাকে। দ্বীনে মধ্যপন্থা মানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অনুসরণ করা। অতিরঞ্জন মানে তার চেয়ে বেশি কিছু করার চেষ্টা করা, আর অবহেলা মানে সেই পর্যায়ে না পৌঁছানো।"[৪] এছাড়াও আরো দুটি শব্দ রয়েছে যা হল ইসতিতাআত বা ইসতিতাআহ (টেমপ্লেট:Lang-ar) যার অর্থ সাধ্য, এবং ঊস'(উন) (وُسْع ঊস্‌'(উ্বন)) যার অর্থ সামর্থ্য, সাধ্য, ক্ষমতা, শক্তি, প্রাচুর্য, প্রশস্ততা, ধারণক্ষমতা।

ইসলামে মধ্যমপন্থার বিপরীত হলো বাড়াবাড়ি, সীমালঙ্ঘন, অতিরঞ্জন, কঠিন করা, কোরআনে এসেছে বাগীঈ (بغي) হিসেবে, হাদীসে যে শব্দগুলো এসেছে তা হলো গুলু (غُلُوَّ), গালাবা (غَلَبَ) , তানাত্তা'ঊ (تَنَطِّعُوْ), মুবাল্লাগাত (مبالغة)।


গুরুত্ব[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

জীবনের সকল ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন মানুষকে গতিশীল করে, কাজকে সহজ করে, সমাজকে উন্নত করে ,ব্যক্তি জীবন ও পারিবারিক জীবন সর্বক্ষেত্রে একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে‌ ।

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব, সমাজ ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না, চলতে পারে না। সমাজের প্রতিটি সদস্য কে নিয়ে মানুষের বসবাস, একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল, আল্লাহ ছাড়া প্রতিটি সৃষ্টিকে আল্লাহ কারো না কারো উপর নির্ভরশীল করেছেন, একের কাছে অন্যের প্রয়োজনে আছে। অধিকার আছে, দায়িত্ব আছে, কাজ আছে, পাওনা আছে, অধিকার আদায় দায়িত্ব পালন এর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে ,তাহলে ব্যক্তি সফল হবে, সমাজ সুন্দর হবে ,মানুষ উপকার পাবে, দেশ গড়াসহজ হবে, এই ভারসাম্য পূর্ণ জীবন মানুষকে দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তি দিবে, এমন একটি জীবন গড়ে তোলার জন্য ইসলাম মধ্যমপন্থা অবলম্বনের গুরুত্ব দিয়েছে।


আরও দেখুন[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Islam-stub

  1. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  2. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  3. টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  4. স্ক্রিপ্ট ত্রুটি: "উদ্ধৃতি" নামক কোনো মডিউল নেই।