অঁরি মোয়াসঁ

ফের্দিনঁ-ফ্রেদেরিক-অঁরি মোয়াসঁ (টেমপ্লেট:Lang-fr) (২৮শে সেপ্টেম্বর ১৮৫২, প্যারিস, ফ্রান্স - ২০শে ফেব্রুয়ারি, ১৯০৭, প্যারিস, ফ্রান্স) একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি রসায়নবিদ। তিনি সর্বপ্রথম ফ্লোরিন নামক গ্যাসীয় মৌলিক পদার্থটি গবেষণাগারে পৃথক করে এটির বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করতে সক্ষম হন। বর্তমান আধুনিক যুগে ফ্লোরিন গ্যাসটি বহু বিচিত্র ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া তিনি মোয়াসঁ বৈদ্যুতিক চুল্লী উদ্ভাবনের জন্যও পরিচিত। রসায়নে বিভিন্ন অবদানের জন্য তিনি ১৯০৬ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি আন্তর্জাতিক আণবিক ভর কমিটির একজন মূল সদস্য ছিলেন।[১]
শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]
মোয়াসঁ ১৮৭৪ সালে ফ্রান্সের প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় (Université de Paris, ইউনিভের্সিতে দ্য পারি) থেকে স্নাতক হন। এরপর তিনি প্যারিসের একল সুপেরিয়র দ্য ফার্মাসি-তে (École Supérieure de Pharmacie, "উচ্চতর ঔষধবিদ্যা বিদ্যালয়") পড়াশোনা করে ১৮৭৯ সালে প্রথম শ্রেণীর ঔষধবিদ হিসেবে উত্তীর্ণ হন। ১৮৮০ সালে সর্বন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ থেকে ডক্টরেট সনদ লাভ করেন। ১৮৮৬ সালে তিনি একল সুপেরিয়র দ্য ফার্মাসিতে বিষবিজ্ঞানের অধ্যাপক পদ লাভ করেন এবং ১৮৮৯ সালে একই প্রতিষ্ঠানে খনিজ রসায়নের অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন ও এর এক বছর পরে সর্বন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ভৌত রসায়ন বিভাগের সভাপতি নিযুক্ত হন।
কর্মজীবন[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]
এর আগে ১৮৮৪ সাল থেকে তিনি ফ্লোরিনের যৌগগুলির ব্যাপারে গবেষণাকাজ শুরু করেন। এর দুই বছর পর ১৮৮৬ সালে তিনি হাইড্রোফ্লোরিক অ্যাসিডে পটাশিয়াম ফ্লোরাইডের একটি দ্রবণকে তড়িৎ-বিশ্লেষিত করে ফ্লোরিন গ্যাস প্রস্তুত করতে সমর্থ হন। এরপর তিনি মৌলটির বৈশিষ্ট্য ও অন্যান্য মৌলসমূহের সাথে এটির ক্রিয়া-বিক্রিয়ার একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণাকাজ সম্পাদন করেন। মোয়াসঁ-র এই কাজ ও সাফল্য বিভিন্ন কারণে অত্যন্ত প্রশংসনীয়। প্রথমত, অন্যান্য রসায়নবিদরা যেখানে বিষাক্ত ফ্লোরিন গ্যাসের উপর দুরূহ গবেষণাকাজে বারংবার ব্যর্থতার কারণে হাল ছেড়ে দিচ্ছিলেন, সেখানে তিনি অধ্যবসায় ও উদ্ভাবনকুশলতার পরিচয় দেন। মোয়াসঁ নিজেও ফ্লোরিন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্যের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। প্রথম দিকের পরীক্ষাগুলিতে ব্যর্থ হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি প্লাটিনামের তৈরি ইংরেজি ইউ-আকৃতির নল ব্যবহার করে দুইটি ফ্লোরাইড যৌগের মধ্যে শক্তিশালী বিক্রিয়া সংবরণ করতে সক্ষম হন। ফ্লোরাইড যৌগ দুইটি ছিল শুষ্ক পটাশিয়াম ফ্লোরাইড (KF) এবং শুষ্ক, পানিহীন হাইড্রোফ্লোরিক অ্যাসিড (HF)। এই সরঞ্জামটি ব্যবহার করেই তিনি ১৮৮৬ সালে ফ্লোরিন পৃথক করতে সক্ষম হন।[২][৩] দ্বিতীয়ত, মোয়াসঁ-র এই সাফল্য ভবিষ্যতের রসায়ন শিল্পে ফ্লোরিনের বহু ব্যবহারিক যৌগের দ্বার উন্মোচন করে। মোয়াসঁ তার এই কাজের জন্য ১৯০৬ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। নোবেল পুরস্কার সমিতি লেখে যে "আপনি যে অসাধারণ পরীক্ষা চালানোর দক্ষতা দেখিয়ে এই বন্যজন্তুসম মৌলিক পদার্থটির উপরে গবেষণা চালিয়েছেন, তা সারা বিশ্ব প্রশংসার চোখে দেখে।"[টীকা ১] শেষজীবনের ফরাসি সরকার তাকে কোমঁদর দ্য লা লেজিওঁ দোনর (Commandeur de la Legion d'honneur) আখ্যায় ভূষিত করে।

মোয়াসঁ কৃত্রিম উপায়ে হীরা তৈরির ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন।[৪] এর সূত্র ধরে তিনি ১৮৯২ সালে মোয়াসঁ বৈদ্যুতিক আর্ক চুল্লী নামের একটি সরল চুল্লী উদ্ভাবন করেন এবং এটি ব্যবহার করে বহুসংখ্যক নতুন রাসায়নিক যৌগ প্রস্তুত করেন। এছাড়া তিনি চুল্লীটির সাহায্যে এমন সমস্ত পদার্থ বাষ্পীভূত করতে সক্ষম হন যেগুলিকে অতীতে গলনের অযোগ্য বলে গণ্য করা হত। মোয়াসঁ তার চুল্লীতে লোহা ও অঙ্গারায়িত চিনিকে সংযুক্ত করেন, ফলে কার্বন গলন্ত লোহাতে দ্রবীভূত হয়। এই দ্রবণটিকে ঠান্ডা পানিতে দ্রুত শীতল করলে লোহাটি অত্যন্ত উচ্চচাপে কঠিন রূপ ধারণ করে এবং এর ভেতরে আণুবীক্ষণিক কার্বন কণাগুলি হীরার মত ধর্ম প্রদর্শন করে। ১৮০৩ সালে মোয়াসঁ তাই দাবী করেন যে তিনি তার চুল্লীতে কৃত্রিম হীরা সংশ্লেষণ করতে পেরেছেন, তবে বর্তমানে তার এই সাফল্যকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়। তবে অনুরূপ কৌশল ব্যবহার করে তিনি ক্যালসিয়াম কার্বাইড থেকে অ্যাসিটিলিন নামক যৌগটিকে লাভজনকভাবে বিপুল পরিমাণে শিল্পোৎপাদনের একটি পদ্ধতি বের করেন।
রচনাকর্ম[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]
মোয়াসঁ-র বৈজ্ঞানিক রচনাবলির মধ্যে ল্য ফুর এলেক্ত্রিক্ (Le Four électrique, ১৮৯৭; “বৈদ্যুতিক চুল্লী”), ল্য ফ্লুয়র এ সে কোঁপোজে (Le Fluor et ses composés, ১৯০০; "ফ্লোরিন ও তার যৌগসমূহ") এবং ৫ খণ্ডের ত্রেতে দ্য শিমি মিনেরাল (Traité de chimie minérale, ১৯০৪-১৯০৬; "খনিজ রসায়ন আলোচনাগ্রন্থ") উল্লেখযোগ্য।
গবেষণা[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]
ফ্লোরিন বহু বছর ধরে সুপরিচিত ছিল, কিন্তু এটিকে বিচ্ছিন্ন করার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল, এবং কিছু গবেষক প্রয়াসে মারা গিয়েছিল।
তরল হাইড্রোজেন ফ্লোরাইড (এইচএফ) -এ পটাশিয়াম হাইড্রোজেন ডিফ্লুরাইড (কেএইচএফ 2) এর দ্রবণের ইলেক্ট্রোলাইসিসের মাধ্যমে অঁরি মোয়াসঁ শেষ পর্যন্ত ১৮৮৬ সালে ফ্লোরিন প্রস্তুত করতে সফল হন।
মৃত্যু[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]
মোয়াসঁ ১৯০৭ সালে রসায়নবিদ্যায় তার নোবেল পুরস্কারটি গ্রহণ করে সুইডেন থেকে ফ্রান্সে ফেরত আসার ঠিক পরেই হঠাৎ তীব্র অ্যাপেন্ডিসাইটিসের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, কেননা তখন রোগটির কোনও ভাল চিকিৎসা ছিল না।
টীকা[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]
আরও পড়ুন[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]
টেমপ্লেট:কমন্স বিষয়শ্রেণী টেমপ্লেট:Wikisource author
- Biography Biography from Nobelprize.org website
- Scientific genealogy
- Biography
- Books and letters by Henri Moissan in Europeana
টেমপ্লেট:১৯০৬ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী টেমপ্লেট:Nobel Prize in Chemistry
- ↑ টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ {{#if: | {{{author}}} }} {{#if: | [{{{url}}} {{{title}}}] }} {{#if: | {{{publisher}}}. }} {{#if: | Accessed: {{{access-date}}}. }} {{#if: Moissan, Henri | Moissan, Henri }} {{#if: https://www.europeana.eu/resolve/record/9200103/DFC747FFF8685A0BF20C75ACFABB1D6DCCAEA54B | Le diamant : conférence faite à la Société des amis de la science le 17 mai 1893 }} {{#if: Europeana | Europeana. }} {{#if: | তারিখ {{{সংগ্রহ-তারিখ}}}. }}
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "টীকা" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="টীকা"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি